ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা

পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে দেয়া যাবে না

কয়েকদিনের মধ্যে দেশে করোনা সংক্রমণের হার অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এক সপ্তাহের ব্যবধানে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি। উদ্বেগের বিষয় হলো, এ পরিস্থিতিতেও দেশের প্রায় সর্বত্রই চলছে ঢিলেঢালা মনোভাব; মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টিকে একবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না।


ফারজানা ববি নাদিরা | আপডেট: বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২৭, ২০২২

পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে দেয়া যাবে না
করোনা নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। খোলার চার মাসের মাথায় ফের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ আছে, সেখানে তা চলবে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী বিশেষ শর্তসাপেক্ষে সব ধরনের অনুষ্ঠানে সীমিতসংখ্যক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতার বিষয়টিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ নিজে সচেতন না হলে শুধু বিধিনিষেধ আরোপ করে করোনার সংক্রমণ রোধ করা যাবে না। 

করোনা মোকাবিলায় এর আগে জারি করা হয়েছিল ১১ দফা বিধিনিষেধ, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকারের সেসব বিধিনিষেধ বলবৎ থাকা সত্ত্বেও গণপরিবহণে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। শহরের অলিগলি, কাঁচাবাজার-সর্বত্র মানুষের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি নানা পর্যায় থেকে ব্যাপক কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীনতা প্রদর্শন করছে। এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও খোলা রয়েছে পর্যটনকেন্দ্র, চলছে বাণিজ্য মেলা। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ছুটির দিনগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। 

জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ও বাণিজ্য মেলার বেশিরভাগ স্থানে বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে করোনার ঊর্ধ্বগতি কতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক দিনে করোনার ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা প্রবল। কাজেই করোনার ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি তা কার্যকর করতেও সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থাৎ বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর হতে হবে। একইসঙ্গে বাড়াতে হবে টিকাদান কর্মসূচির পরিসর। তা না হলে সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। টিকা নেওয়ার পরও কোভিডের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দীর্ঘস্থায়ী না হওয়া; সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুরক্ষার মাত্রা কমে যাওয়া; একাধিক ডোজ টিকা নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হওয়া- এসব বিষয় বহুল আলোচিত। বস্তুত টিকা নেওয়ার পরও কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে যারা টিকা নেয়নি তাদের তুলনায় টিকা নেওয়া ব্যক্তির করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার হার কম। কাজেই সুস্থ থাকতে হলে সবাইকে একাধিক ডোজ টিকা নেওয়ার পাশাপাশি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। যেহেতু ওমিক্রন অতি দ্রুত ছড়ায়, সেহেতু সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত। কাজেই এদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া দরকার। যেহেতু কমবয়সী শিশুদের এখনই টিকার আওতায় আনা যাচ্ছে না, সেহেতু শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো অবস্থাতেই করোনা পরিস্থিতি বিগত ঢেউগুলোর মতো ভয়াবহ হতে দেয়া যাবে না। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাওয়া কিংবা লকডাউনের মতো অপ্রত্যাশিত প্রেক্ষাপট তৈরি কোনোটাই কাম্য নয়।