ফেনীতে তীব্র আকার ধারণ করেছে নদী ভাঙন। জেলার ছোট ফেনী, সিলোনিয়া ও কালীদাস পাহালিয়া নদীর অন্তত ৪০ টি স্থানের অব্যাহত ভাঙনে এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে বসতি, কৃষি জমি ও সড়ক।
ভাঙনের কবলে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। ভাঙন কবলিতরা নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, মুছাপুরে রেগুলেটর পুনঃনির্মাণ না করা পর্যন্ত ভাঙন রোধে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
সোনাগাজীর চর মজলিশপুর ইউনিয়নের কাজীর হাট আউরারখিল জেলে পল্লীর পলাশী রানীর উনুনে ফুটছে পানি। তরকারিতে গুটি কয়েক আলু-চিচিঙ্গা। ঘরের কর্তা চাল আনতে পারলেই সাত সদস্যের পরিবারে জুটবে দুপুরের আহার। গেল বার সর্বস্ব বিলীন হলেও এবার নদীতে গেছে অর্ধেক। তবে, বাকি অংশ টিকবে কিনা সেই চিন্তাই তাদের।
ফেনীতে নদীপাড়ের এমন অনিশ্চয়তার জীবন হাজারো মানুষের। জেলার ছোট ফেনী, কালিদাস পাহালিয়া ও সিলোনীয়া নদী তীরে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে শতাধিক বসতি, রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমি। ঝুঁকিতে রয়েছে বাজার, মসজিদ,শ্মশানসহ এলাকার প্রধান সড়ক।
বন্যার ক্ষত পূরণের আগেই মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে পড়ায় পানির চাপে বিলীন হচ্ছে নদী তীরবর্তী জনপদ। যার জন্য প্রভাবশালীদের অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনকে দুষছেন স্থানীয়রা। আগামী বর্ষার আগে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে হাজারো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।
কাটাখিলা গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, আগেও দুইবার তার ঘর বসতি গেছে নদীতে। এবার গেছে দালান ঘর।
ছাগলনাইয়ার নিজকুঞ্জরা এলাকার বাসিন্দা ফায়সাল ভূইঁয়া বলেন, গেল পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার সরকারের প্রভাবশালীরা নির্বিচারে বালু তুলেছে। যার কারণে বসতভিটাসহ ফসলি জমি বিলীন হয়েছে নদীতে। এখনও হচ্ছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় প্রাথমিকভাবে নদী ভাঙন ঠেকাতে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তবে, নতুন করে মুছাপুর রেগুলেটর ও ক্লোজার নির্মাণ না হলে স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধ করা যাবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হবে।
ফেনীতে সহায়-সম্বল রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন হাজারো নদীপাড়ের মানুষ। এমন অবস্থায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ভাঙন কবলিতদের।