সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। বিশুদ্ধ স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য প্রাপ্তি নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক মানুষের অধিকার। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় এমন খাদ্য পাওয়া কঠিন, যাতে ভেজাল বা বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয় না। কোনোটা প্রত্যক্ষভাবে, আর কোনোটা পরোক্ষভাবে মানবদেহে বিষক্রিয়া ঘটাচ্ছে। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে কঠিন রোগব্যাধিতে। জনস্বাস্থ্য ভয়ংকর হুমকিতে।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মাঠে উৎপাদন বেড়েছে। উৎপাদনে এসেছে আধুনিকতা। নতুন নতুন ফসলের প্রতি কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন নতুন গবেষণা থেকে দেশের কৃষি উৎপাদনে রীতিমতো বিপ্লব এসেছে। ভবিষ্যতে আরো উন্নতির আশা করছে বাংলাদেশ।
বলা হচ্ছে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমরা আসলে কী খাচ্ছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার। কীটনাশক ব্যবহার করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কৃষক মাত্রা না বুঝে মাঠে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। যেমন কীটনাশক ব্যবহার করা হয় হাইব্রিড বীজধানে। হাইব্রিড বীজ মানুষের খাওয়ার জন্য নয়। রোগ ছড়ানো রোধে আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীদের বীজ শোধন করতে বলা হয়। ফানজিসাইডজাতীয় বিষাক্ত ছত্রাকনাশক মেশানো হয়। আর এ কারণে অবিক্রীত বীজ ধ্বংস করে দিতে হয়।
সম্প্রতি জানা যায়,
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে একটি অটো রাইস মিলে হাইব্রিড বীজধান চার দিন ধরে প্রক্রিয়াজাত করছেন একজন ব্যবসায়ী। গোলাপি রঙের ধান রোদে শুকানো হচ্ছে। পরে এ ধান ভাঙিয়ে চাল করা হবে বলে জানিয়েছেন চাতালের এক পরিচালক। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর দাবি, এগুলো বীজধান নয়। এ ধানের চাল গোখাদ্য হিসেবে বিক্রয় করা হবে।
এটি স্পষ্ট যে, এই চাল বাজারজাত করা হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। অবশ্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পরীক্ষার জন্য তা ঢাকায় পাঠানো হবে। পরীক্ষার ফল না আসা পর্যন্ত এই বীজধান থেকে যেন চাল তৈরি না হয় সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে। সরকার এ ক্ষেত্রে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবে এটাই প্রত্যাশা।