ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪ |

EN

নান্দাইলে লোডশেডিং

২৪ ঘণ্টায়, সাড়ে ১৪ ঘণ্টা ছিল না বিদ্যুৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, জুলাই ২৬, ২০২২

২৪ ঘণ্টায়, সাড়ে ১৪ ঘণ্টা ছিল না বিদ্যুৎ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নে বিদ্যুৎ বিভাগের সময়সূচি অনুযায়ী লোডশেডিং হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টা। তবে সেখানে এক দিনে বিদ্যুৎ ছিল না ১৪ ঘণ্টার বেশি। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, উপজেলা সদরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকাগুলো বেশি সময় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকছে। বিষয়টি স্বীকার করে পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, উপজেলা সদরে অফিস-আদালত, হাসপাতাল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থাকায় সেখানে কিছুটা কম সময় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের খামারগাঁও গ্রামে অবস্থান করে দেখা যায়, দুপুর দেড়টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা গ্রামটিতে বিদ্যুৎ ছিল না। এরপর রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল। রাতে সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। 

এরপর ৪৫ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল। আবার রাত পৌনে ১১টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। এর পর থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল। ভোর পাঁচটার পর থেকে সকাল সোয়া সাতটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। ৪০ মিনিট থেকে আবার ৭টা ৫৫ মিনিট থেকে সকাল ৯টা ২০ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। এর পর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল।

সময়ের হিসাবে খামারগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪ ঘণ্টা ২৫ মিনিট বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিলেন। অর্থাৎ সেখানে বিদ্যুৎ ছিল ৯ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট।

খামারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা প্রবাল কান্তি মজুমদার বলেন, ‘গত সপ্তাহ থেকে প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা পরপর এক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। এতে আমাদের গৃহস্থালি কাজে সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বিঘ্ন ঘটছে। শনিবার রাত থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় গরম কিছুটা কম অনুভূত হচ্ছে। তাই দিন–রাত লোডশেডিং থাকার পরও আবহাওয়ার কারণে কিছুটা স্বস্তি মিলছে।’

অন্যদিকে উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মানব চন্দ্র সরকার জানান, গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিট, রাত পৌনে ১০টা থেকে ১০টা ৫০ মিনিট, রাত আড়াইটা থেকে আজ ভোর ৫টা ও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ৪ মিনিট পর্যন্ত তাঁদের গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের গ্রাম ৬ ঘণ্টা ২৯ মিনিট বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিল। তিনি জানান, গতকাল তুলনামূলক বেশি সময় বিদ্যুৎ ছিল। অন্যান্য দিন এর চেয়েও কম সময় থাকে।

কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নান্দাইল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) বিপ্লব চন্দ্র সরকার মুঠোফোনে বলেন, তাঁরা কিশোরগঞ্জ গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ পান। নান্দাইল উপজেলার মুশুলি ও কানুরামপুরে একটি করে উপকেন্দ্র রয়েছে। এই ২টি উপকেন্দ্রে ৬টি করে মোট ১২টি ফিডার (একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের আওতাধীন এলাকা) লাইন আছে। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের পাশে আছে আরও তিনটি ফিডার লাইন। মোট ১৫টি ফিডার লাইনে সরবরাহ চালু রাখতে পিক আওয়ারে ন্যূনতম ২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ১২ থেকে ১৫ মেগাওয়াট। রাত ১১টার পর এ বরাদ্দ কোনো কোনো সময় আট-নয় মেগাওয়াটে নেমে আসে। তাই ফিডারগুলায় লোডশেডিংয়ের সময়সূচি রক্ষা করা অনেক সময় সম্ভব হয় না।

ডিজিএম বিপ্লব চন্দ্র সরকার আরও বলেন, এ উপজেলার ১৫টি ফিডার লাইনের বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের সঠিক তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে গড়ে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ও নান্দাইল পৌর শহরে গড়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টার জন্য বিদ্যুতের লোডশেডিং করা হয়। গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের প্রাপ্তির ওপর লোডশেডিংয়ের সময়ের হেরফের হয়ে থাকে।

সুত্র: প্রথম আলো