ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪ |

EN

পরিস্থি নিয়ন্ত্রণে ১৭ রাউন্ড গুলি ও ৩ রাউন্ড গ্যাস গান নিক্ষেপ

ধনবাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি একাংশের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৩০

হাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, জুলাই ২৪, ২০২২

ধনবাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি একাংশের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৩০
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী সরকার সহিদ গ্রুপের কর্মী সমর্থকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ধনবাড়ীর বাঘিল বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ধনবাড়ী সরকারি কলেজ মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ধনবাড়ী বাঘিল এলাকায় সরকার শহিদ গ্রুপের নেতাকর্মীরা সম্মেলনের বিপক্ষে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করে। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা সম্মেলনে আসা কেন্দ্রীয় নেতাদের বাঁধা ও সম্মেলনে হামলা করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। এতে ওই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ১৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে এবং ৩ রাউন্ড গ্যাস গান নিক্ষেপ করে। এতে মধুপুর অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির পিএসআই আনিছুর রহমানসহ ৫ পুলিশ আহত হয়। অপরদিকে শহিদ গ্রুপের ২৫/৩০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে ধনবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ কর্মীকে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সহিদ গ্রুপের, চান মিয়া, মাসুদ রানা ও মো. আসিফ আহমেদ।

‘বিএনপি’র বিদ্রোহী অংশের আহতদের বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান সরকার সহিদ গ্রুপের ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টু।’

কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টু ও হুমায়ুন তালুকদারসহ একাধিক নেতা জানান, দীর্ঘদিন বিএনপি করে হামলা মামলার শিকার হয়ে কমিটিতে স্থান পাওয়া তো দূরের কথা দাওয়াতও পাইনি। কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্মেলনে যাওয়ার পথে রাস্তায় সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করতে সমবেত হয়ে ছিলাম। বাঘিল বাজারে আমাদের অবস্থানের কথা শুনে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক মুহূর্তের মধ্যে সেখানে জড়ো হয়। তাঁরা অভিযোগ করেন, খবর শুনে আ’লীগের সহযোগিতায় চলা স্বপন ফকির গ্রুপ বিক্ষোভ স্থলে পুলিশ পাঠায়। পুলিশ এসে বিনা উস্কানিতে লাঠি চার্জ করে। এ সময় পুলিশের সাথ সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ  ২০/২৫ রাউন্ড গুলি ও গ্যাস গান ছুঁড়ে। 

মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরকার সহীদ বলেন,  নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যাওয়ার পথে পুলিশ বাধা দেয়। পরে গোলাবাড়ী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন তালুকদারকে আটক করে থানায় নেওয়ার সময় নেতা-কর্মীরা বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ৩ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ ২৫/৩০জন আহত হয়। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চান মিয়া এবং ওসি (তদন্ত) ইদ্রিস হোসাইন বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির একটি গ্রুপ বাঘিল এলাকায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছিল। এ সময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তাঁরা পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে আত্মরক্ষার্থে ১৭ রাউন্ড শর্টগা গুলি ও ৩ রাউন্ড গ্যাস গান নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে পুলিশের পিএসআই আনিছুর রহমানসহ ৫ পুলিশ আহত হয়।

এদিকে পুলিশ পাহারায় ধনবাড়ী সরকারী কলেজ মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এড. আহমেদ আজম খান উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসাবে অধ্যক্ষ এম আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক এবং পৌর বিএনপির সভাপতি পদে এসএমএ সোহবান ও সাধারণ সম্পাদক পদে রফিকুল ইসলাম স্বপনের নাম ঘোষণা করেন। উপজেলা বিএপির আহবায়ক অধ্যক্ষ এম আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আ. ছালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা ফকির মাহবুর আনাম স্বপন, শিশু বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, মাহমুদুল হক সানু, এড. ফরহাদ ইকবাল প্রমূখ। পরে তাঁরা পুলিশ পাহারায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ধনবাড়ী ত্যাগ করেন।