বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের প্রথম পর্ব অর্থাৎ ঢাকা পর্ব শেষ হয়েছে। চার দিনে আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে 'হোম অব ক্রিকেট' খ্যাত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। এবার বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের পালা। তিনদিন বিরতির পর আজ থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে বিপিএল উৎসব। ঢাকা পর্ব শেষ হওয়ার দুই দিনের মধ্যেই সবগুলো দল পৌঁছে গেছে চট্টগ্রামে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেও চার দিনে আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা পর্বে অনেক সমালোচনা, ত্রুটি এবং বিতর্ক হলেও চট্টগ্রাম শোনাচ্ছে আশার বাণী।
ঢাকায় সবথেকে সমালোচিত হয়েছে উইকেট। টি-টোয়েন্টি মানেই চার-ছয়ের ধুম হলেও ঢাকায় প্রথম পর্বের ম্যাচগুলোতে দেখা গেলো একদম উল্টো চিত্র। মিরপুরে চার দিনেই ছিল রান খরা। দিনের ম্যাচগুলো ছিল লো স্কোরিং। সন্ধ্যার পর যদিও কিছু্টা রানের লড়াই মঞ্চস্থ হয়েছে। তবে 'সাগরিকা' খ্যাত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম হাই স্কোরিং ম্যাচের জন্য বিখ্যাত। এই উইকেটে বরাবরই রানের জোয়ার বইতে দেখা গেছে। চট্টগ্রামের উইকেট রান করার জন্য 'লাকি গ্রাউন্ড' হিসেবে পরিচিত। ব্যাটাররা এখানে রান পান। ঢাকার মতো দিন এবং রাতের উইকেটের মধ্যে যে তারতম্য, তা এখানে না দেখার সম্ভাবনাই বেশি। এখানে ঘুচতে পারে রান খরার আক্ষেপ। কারণ বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এই মাঠেই।
চট্টগ্রামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুও আত্মবিশ্বাসী, টি-টোয়েন্টির আসল ধামাকা এবার দেখা যাবে সাগরিকায়। যদিও রোদের তীব্রতা কম থাকায় কিছুটা চিন্তিত তিনি, তবুও মিরপুরের চেয়ে ভালো লড়াইয়ের আশা করছেন দেশের অন্যতম সেরা এই কিউরেটর। অবশ্য চট্টগ্রামে এখন নেই ভারতীয় কিউরেটর প্রাভীন হিনগানিকর। ছুটিতে দেশে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। তাই এখনো ফিরতে পারেননি চট্টগ্রাম। এবার বিপিএলের এই পর্ব তাই জাহিদ রেজা বাবু একাই সামলাবেন।
এছাড়া জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মাঠের সংস্কার কাজও করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের আগের জীর্ণ দশা আর নেই। ভাঙ্গাচোরা চেয়ারগুলোকে সরিয়ে বিপিএল উপলক্ষে ১২ হাজার চেয়ার নতুন চেয়ার বসানো হয়েছে। স্টেডিয়ামের চেহারায় জাঁকজমকপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
চট্টগ্রাম পর্বের জন্য রয়েছে আরেকটি সুখবর। চট্টগ্রাম পর্ব থেকে বিপিএলে যোগ হচ্ছে বিকল্প 'ডিআরএস' পদ্ধতি। এবারের বিপিএলে 'ডিআরএস' না থাকায় বিতর্কের শঙ্কা ছিল এবং তা বাস্তবে পরিণত হয় মিনিস্টার ঢাকা ও সিলেট সানরাইজার্সের ম্যাচে। এই ম্যাচে বেশকিছু সিদ্ধান্ত ঢাকার বিপক্ষে যায়। তাতেই বয়ে যায় সমালোচনার ঝড়। তাই বিকল্প 'ডিআরএস' পদ্ধতির সিদ্ধান্ত।
বিকল্প 'ডিআরএস' নিয়ে দলগুলোর সাথে অনলাইনে সভা করেছেন বিপিএল টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও বিসিবি প্রধান ম্যাচ রেফারি রকিবুল হাসান। বিকল্প এই 'ডিআরএস' পদ্ধতি কাজ করবে মূলত 'স্লো মোশন' প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে। কট বিহাইন্ডের অস্পষ্টতা দূর করতে এই পদ্ধতি সব সময় কার্যকর না হলেও বল কোথায় গিয়ে পড়ে, কোথায় গিয়ে আঘাত করে সেটি বোঝা যাবে।তাতে অন্তত কিছুটা স্বচ্ছতা পাওয়া যাবে।
সবকিছু মিলিয়ে চট্টগ্রাম পর্বের জন্য আশাবাদী হচ্ছেন দর্শকরা। এবার ক্রিকেটভক্তদের জন্য কিছু উপভোগের মূহুর্ত এনে দেবে সাগরিকা। প্রচুর রান উঠবে, দর্শকরা আনন্দ পাবে, তেমনই প্রত্যাশা সবার।