ভারতের দেশপ্রেমী ও সংগ্রামী নেতা সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন আজ। এই মহান দেশ নেতার হাত ধরে পরাধীন ভারতবাসী স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল। ১৮৯৭ সালের আজকেই এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি। তাঁর মায়ের নাম ছিলেন প্রভাবতী বসু এবং পিতা জানকীনাথ বসু। তাঁর বাবা পেশায় ছিলেন একজন সফল ও সরকারি আইনজীবী। সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন তাঁর বাবা-মায়ের ১৪ সন্তানদের মধ্যে ৯ তম সন্তান। প্রান্ত কলকাতার স্ব-প্রতিষ্ঠিত এই মানুষটি নিজের শিকড়রের সঙ্গে সংযোগ অটুট রেখেছিলেন, প্রত্যেক দুর্গা পূজার ছুটিতে তিনি নিজের গ্রামে ফিরে যেতেন।
১৯০২ সালে শিক্ষা জীবন শুরু হয় এই কিংবদন্তি নেতার। পাঁচ বড় ভাইয়ের সাথে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুলে ভর্তি হন। বিদ্যালয়টিতে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। বিদ্যালয়টিতে ইংরেজী—সঠিকভাবে লিখিত ও কথ্য—লাতিন, বাইবেল, সহবত শিক্ষা, ব্রিটিশ ভূগোল এবং ব্রিটিশ ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত ছিল, কোনও ভারতীয় ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা ছিল না।
তিনি এই বিদ্যালয়টিতে শুধু মাত্র তাঁর বাবার পছন্দের ছিলো, তাঁর বাবা চেয়েছিলো ছেলেরা যেন নির্দ্বিধায় ত্রুটিহীন ইংরেজি বলতে পারে। এছাড়া বাড়ির বিপরীত বৈশিষ্ট্যের তাঁর বাড়িটি। কারন,তাঁর বাড়িতে কেবলমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা হতো।
ছোট থেকেই বিপ্লবী মন্ত্রে দিক্ষীত ছিলেন তিনি। পড়াশোনার সময় থেকেই ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে তিনি যে সংগ্রাম শুরু করেন, তাকে এখনও স্মরণ করেন গোটা দেশের মানুষ। বাবা, মায়ের চোখে এড়িয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এই কিংবদন্তি নেতা। সেই থেকে প্রত্যক্ষভাবে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করে গোটা ভারতবর্ষ তোলপাড় করে দিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নেতাজির কি হয়, তা নিয়ে স্বাধীনতার এত বছর পরও জল্পনা অব্যাহত। সেই নেতাজির, ভারতের বীর যোদ্ধার জন্মদিন আজ। এই কিংবদন্তি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতবাসীরা নানাভাবে উদযাপন করে থাকেন।
এই সংগ্রামী, দেশপ্রেমী নেতার দেশের মানুষের জন্য কিছু বিখ্যাত উক্তি রয়েছে, যা সবসময় মানুষের মনে গাঁথা রয়ে যাবে। যেমন-
* "সবাই একত্রিত হয়ে যদি কোও সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চাওয়া হয়, তাহলে তা সম্পূর্ণ হবেই"
* "তোমরা আমায় রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব" ব্রিটিশদের ভারত থেকে উৎখাত করতে বলেন।
* "জীবনে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার জন্য সাহসী হতে হবে" বলেও মন্তব্য করেন সুভাষ চন্দ্র বসু
* "ভারত ডাকছে। রক্ত ডাকছে। আমাদের জেগে উঠতে হবে, সময় নষ্ট করা যাবে না।"
১৯১৮ সালে দর্শনে স্নাতক হন সুভাষ চন্দ্রবসু। ১৯২০ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ব্রিটিশ সরকারের অধীনে চাকরি করেননি সুভাষ। উলটে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গোটা দেশের মানুষকে একত্রিত করে সংঘবদ্ধ লড়াই শুরু করেন। যা চিরস্মরণীয় ভারতবাসীর কাছে।