বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সময়টা খুব বেশি ভালো যাচ্ছে না। ক্রিকেট কিংবা ফুটবল কোনটাতেই শিরোপা জয়ের স্বাদ পাওয়া হচ্ছে না দীর্ঘদিন। ক্রিকেটে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষেও সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। অন্যদিকে ফুটবলে সাফ ব্যর্থতার পর চারজাতি টুর্নামেন্টেও শিরোপা ছোঁয়ার স্বাদ পায়নি বাংলাদেশের ফুটবলাররা। এমতাবস্থায়, আজ বাংলাদেশের সামনে রয়েছে শিরোপা জয়ের সুযোগ। হউক সেটা বয়সভিত্তিক দল, সাফের মতো টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতা সব সময়ই গৌরবের, গর্বের। সেই শিরোপা নিজেদের করে নিয়ে বছরের শেষটা রাঙাতে পারবে কি বাংলাদেশের মেয়েরা?
সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আজ (২২ ডিসেম্বর) ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। গ্রুপ পর্বে দারুণ খেলেই ফাইনালে পা রাখে মারিয়া-তহুরুরা। ফাইনালে উঠতে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন ছিল ১ পয়েন্ট। সেখানে শ্রীলঙ্কাকে রীতিমতো উড়িয়ে ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। নিজেদের শেষ ম্যাচে ১২-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেয় মারিয়ার দল। শেষ ম্যাচে বড় জয় পাওয়ায় পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে বাংলার মেয়েরা।
যে কোন টুর্নামেন্টেই ভারত বাংলাদেশের জন্য এক আতংকের নাম। যদিও এবারের সাফে গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ দল। সেই ম্যাচে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সব মিলিয়ে ইতিবাচক মনোভাবকে সঙ্গী করেই শিরোপা উল্লাসে মাতার লক্ষ্যে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল।
ভারত শক্তিশালী দল হলেও তাদেরকে যে হারানো সম্ভব সেটি ইতিমধ্যেই প্রমাণ করিয়ে দেখিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ফাইনালেও তাদেরকে হারানো সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। বাংলাদেশের রিতা পূর্ণা মনে করেন শেষ ম্যাচগুলোর মতো ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করতে পারলে শিরোপা জয় অসম্ভব কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘ভারত খুব শক্তিশালী দল। যদি আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারি এবং আমাদের তিন-চার ম্যাচের পারফরমেন্স যদি অব্যাহত থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা শিরোপাটা জিতেই আসব। আমাদের মাঝে যে এনার্জি রয়েছে, তা কাজে লেগেছে।’
বাংলাদেশ দলের ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন বিশ্বাস রাখেন নিজের সতীর্থদের উপর। দেশবাসীর দোয়া থাকলে এবারের শিরোপা বাংলাদেশের হবে বলেই বিশ্বাস তার। তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকে নব্বই মিনিট পর্যন্ত আমরা একই ছন্দে খেলে জেতে চেষ্টা করি। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) আমাদের ফাইনাল, আমি চাই দেশবাসী আমাদের জন্য দোয়া করে যেন আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারি।’
ভারতের বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। পুরো টুর্নামেন্ট এ বাংলাদেশ দল যেভাবে খেলেছে তাতে খুশি ছোটন। তিনি বিশ্বাস করেন, ফাইনালেও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল সুযোগ পাবে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে শিরোপা না জেতার কোন কারণ দেখেন না তিনি। গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে মেয়েরা স্বাভাবিক খেলা খেলবে। সেখানেও সুযোগ আসবে, সেটা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’
পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দল ভারতের মেয়েদের হারিয়ে সাফের শিরোপা নিজেদের করে নিতে পারলে সেটি হবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম বড় সাফল্য। সাফের ফাইনালের জন্য প্রস্তুত মঞ্চ, বাংলাদেশের মেয়েরা কি পারবে সেই মঞ্চে শিরোপা নিয়ে উল্লাস করে বছরের শেষটা রাঙাতে?