গতকাল শেষ হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। সদ্য শেষ হওয়া আসরের শুরু থেকে দারুণ ক্রিকেট খেলে শিরোপা ঘরে নিয়ে গেছে ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটা তাদের দ্বিতীয় শিরোপা।
এর আগে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। সেই জয়ের ১৭ বছর পর ফের বিশ্বকাপ জিতল টিম ইন্ডিয়া।
প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় তারকাদের অনেকেই ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন। পেশাদার ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেও ক্রিকেটের সঙ্গেই আছেন তারা।
মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তবে এখনও আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলছেন।
সেই বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন গৌতম গম্ভীর। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। পূর্ব দিল্লির সংসদ সদস্য হন নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর হয়ে এসেছিলেন গম্ভীর। দলের জয়ে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
২০০৭ সালে ভারতের শিরোপা জয়ে অন্যতম কারিগর ছিলেন হরভজন সিংহ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পরও তিনি আইপিএল খেলেছিলেন কয়েক বছর। পরে রাজনীতিতে যোগ দেন। বর্তমানে হরভজন সিং আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য। এর পাশাপাশি ক্রিকেটে ধারাভাষ্যকার এবং বিশ্লেষকের কাজও করেন।
বীরেন্দ্র শেহবাগ ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন। যদিও তিনি ফাইনালে খেলেননি। ২০১৫ সালের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন শেহবাগ। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রীর অধীনে ন্যাশনাল অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সির অন্যতম সদস্য শেহবাগ।
টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা জয়ে অনন্য অবদান ছিল যুবরাজ সিংয়ের। তিনি সেই আসরে ইংলিশ তারকা পেসার স্টুয়ার্ড ব্রডকে ছয় বলে ৬টি ছক্কা হাঁকানোর বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন যুবরাজ। এখন তরুণ ক্রিকেটারদের মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন রোহিত শর্মা। তার নেতৃত্বেই ১৭ বছর পর আরও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল ভারত। সেই দিনের সেই দলের একমাত্র সদস্য রোহিতই, যিনি ২০২৪ সালের দলেও রয়েছেন। শনিবার দেশকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়ে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর ঘোষণা দেন রোহিত।
২০০৭ সালের ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন দীনেশ কার্তিক। ২০২৪ সালে তিনি সকল প্রকার ক্রিকেট এবং আইপিএল থেকেও অবসর ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে আইসিসির অধীনে ধারাভাষ্যকার হিসাবে কাজ করেন কার্তিক।
ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের সদস্য ছিলেন রবিন উথাপ্পা। তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ২০২২ সালে। এখন তিনি ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেন।
২০০৭ সালে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন পীযূষ চাওলা। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু আইপিএল খেলেন এখনও। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে চলতি বছরও খেলেছেন তিনি। এছাড়া ধারাভাষ্যকার হিসাবেও তাকে দেখা যায়।
১৭ বছর আগে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ইউসুফ পাঠান। তিনি খেলা ছাড়েন ২০২১ সালে। ২০২৪ সালে রাজনীতিতে অংশ নিয়ে তৃণমূলের হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গে বহরমপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
ইউসুফ পাঠানের ভাই ইরফান পাঠানও ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। তিনি ২০২০ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। বর্তমানে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্লেষক হিসাবে কাজ করছেন।
ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন অজিত আগরকর। ২০১৩ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক অজিত। পাশাপাশি ধারাভাষ্যকার হিসাবেও কাজ করছেন।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বলা হয় যোগিন্দর শর্মাকে। শেষ ওভারে তার হাতেই বল তুলে দিয়েছিলেন ধোনি। তবে ওই বিশ্বকাপের পর তাকে আর ভারতীয় দলে সেভাবে দেখা যায়নি। যোগিন্দর এখন হরিয়ানা পুলিশের গণ্যমান্য কর্তা। অম্বালায় ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসাবে কর্মরত তিনি, ক্রিকেট থেকে বহু দূরে।
ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন আরপি সিংহ। ২০১৮ সালে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। বর্তমানে হিন্দি ধারাভাষ্যকারদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন এস শ্রীশান্থ। ২০১৩ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। সে বছরই আইপিএলের বেটিংকাণ্ডে তার নাম জড়িয়েছিল। নির্বাসিত হয়েছিলেন। সে সব এখন অতীত। শ্রীশান্থ এখন ক্রিকেট বিশ্লেষকের ভূমিকা পালন করছেন।