বিশ্বকাপের সেরা মঞ্চ থেকেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে 'বিদায়' বলে দিলেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা। বার্বাডোজে শনিবার রাতে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর পুরষ্কার বিতরনীতে কোহলি এই ফরমেটে অবসরের ঘোষণা দেন। ক্রিকেটের তিন ফরমেটেই ভারতের অধিনায়ক রোহিত ঘোষণাটা দেন ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে।
এবারের বিশ্বকাপটা একদমই ভালো যাচ্ছিলো না বিরাট কোহলির। বার্বাডোজে শনিবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে নামার আগে টুর্নামেন্টে তার রান ছিলো মাত্র ৭৭। ফাইনালে খেলে ফেলেন ৫৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। যা, এই ফরমেটে ভারতকে ১৭ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের ভিত এনে দেয়। কোহলিই হন ফাইনালের ম্যাচ সেরা। সেই সেরার পুরষ্কার নিতে এসে টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ রান সংগ্রহক জানিয়ে দেন 'বিদায়'। বলেন, এটাই ছিলো ভারতের জার্সিতে তার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
কোহলি বলেন, 'এটা আমার শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছিলো। আমরা ঠিক এটাই অর্জন করতে চেয়েছিলাম। সৃষ্টিকর্তা মহান। একদিনই পারফর্ম করলাম আর সেটা কাজে এলো দলের। পরিস্থিতিকে সম্মান দেখিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। এখন পরের প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে। দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা দলকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবে।'
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে অবসরে গেলেন ৩৫ বছরের কোহলি। ২০১০ সালের ১২ জুন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে অভিষেক হওয়ার পর এই ফরমেটে ১২৫ ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪ হাজার ১৮৮। ১৩৭-এর ওপর স্ট্রাইক রেটে এক সেঞ্চুরির সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি ৩৮টি। সর্বোচ্চ ইনিংস ১২২ নটআউট।
রোহিত শর্মা টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। ১৫৬-র ওপর স্ট্রাইক রেটে ২৫৭ রান তার। সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া, সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন ভারতের তিন ফরমেটের অধিনায়ক। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েই অবসরে গেলেন ৩৭ বছরের রোহিত। ২০০৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডারবানে অভিষেক হওয়ার পর এই ফরমেটে ১৫৯ ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪ হাজার ২৩১। ১৪০-এর ওপর স্ট্রাইক রেটে পাঁচ সেঞ্চুরির সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি ৩২টি। সর্বোচ্চ ইনিংস ১২১ নটআউট।
রোহিত বলেন, ‘গত ৩-৪ বছর কী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তা এক কথায় বলে বোঝাতে পারবো না। পর্দার পেছনে অনেক ঘটনা আছে। আজকে যা করলাম তা নয়, আগে যা করেছি সেটাও আছে। এই জয় একটা দিনের নয়, গত ৩-৪ বছরের জয়। গত ৩-৪ বছরে যা পরিশ্রম করেছি তারই ফসল এটা।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে কোহলি-রোহিতের অবসর অপ্রত্যাশিত নয়। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে ভারতের সেমিফাইনালে বিদায় নেওয়ার পর লম্বা সময় ধরে এই ফরম্যাটে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি তারা। এবারের বিশ্বকাপ সামনে রেখে গত জানুয়ারিতে ফেরেন ভারতীয় ক্রিকেটের দুই তারকা ব্যাটসম্যান।