আফগানিস্তান এখন আর 'চমক' নয়। বড় দলগুলোর কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম। চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের 'জায়ান্ট কিলার' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আফগানরা। ইংল্যান্ডের পর পাকিস্তান তাদের দ্বিতীয় শিকার। চেন্নাইয়ে বোলিং-ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে ২৮৩ রানের বড়ো টার্গেট টপকে যায় তারা ৮ উইকেট হাতে রেখে।
গুরুমারা বিদ্যা বুঝি একেই বলে। আফগানিস্তানের এই দলটার অনেকেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি পাকিস্তানের শরণার্থী শিবিরে। বিশ্বকাপের জায়ান্ট কিলার মিশনে এবার আফগানিস্তানের শিকার সেই পাকিস্তানই। ইংল্যান্ডের পর পাকিস্তান। আফগানিস্তান এখন আর চমকের নাম নয়। প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়াকু দলের নাম আফগান।
চেন্নাইয়ের উইকেট ঠিক বিশ্বকাপের মতো নয়। কিছুটা স্পিন বান্ধব। এনিয়ে পাকিস্তানের অভিযোগের অন্ত নেই। দুই দলের একাদশের তাই স্পিনারদের প্রাধান্য। রানের চাপে ফেলতে টস জিতে ব্যাটিয়ের শুরুটা দারুণ তাদের। উদ্বোধনী জুটি ৫৬ রানের। ১৭ রান করে সাজঘরে ইমাম উল হক।
আফগান ঘুর্ণিতে রানের গতি কিছুটা কমে পাকিস্তানের। পাকিস্তানের টপ অর্ডার অবিচল। বাবর আজম ও আব্দুল্লাহ শফিকের ৫৪ রানের জুটি। ৫৮ করে সাজঘরে ফেরেন আব্দুল্লাহ। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে বাবর আজম ফেরেন ৭৪ রানে। এই ম্যাচে ফজল হক ফারুকীর বদলে দলে সুযোগ পেলেন তরুণ লেগ স্পিনার নূর আহমাদ। সুযোগটা নিয়েছেন দুই হাত ভরে। ৪৯ রানে তার নামের পাশে তিন উইকেট।
শেষদিকে ইফতেখার শাদাব খান মিলে ব্যাটে ঝড় তোলেন। দুইজনের স্কোরই সমান। ৪০ রান করতে ইফতেখার বল খরচ করেছেন ২৭টি। আর শাদাব খেলেছেন ৩৮ বল। পাকিস্তান সাত উইকেটে তোলে ২৮২ রান।
বড় টার্গেট। উইকেট বিবেচনায় সহজ নয় মোটেও। তবে আফগান দলটার বড় শক্তি মানসিক জোড়। শুরু থেকেই আক্রমণে আফগান দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। পেস কিংবা স্পিন, কোন ভাবেই থামনো যায়নি দুই ওপেনারকে। মাত্র ৯৪ বলেই স্কোরবোর্ড উঠে গেছে শতক। ১৩০ রানের ওপেনিং জুটি।
রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ বলে ৬৫। ইব্রাহিম জাদরান দলকে নেন জয়ের আরো কাছাকাছি। সেঞ্চুরি পাননি। তবে ইব্রাহিমের ৮৭ পাকিস্তানকে ঠেলে দিয়েছে ব্যাকফুটে।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পরও ম্যাচের লাগাম হাতছাড়া হয়নি আফগানিস্তানের। হতে দেননি রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তারা তোলেন ৯৬ রান। রহমত শাহ অপরাজিত ৭৭ রানে। ৪৮ রানে অপরাজিত হাশমতউল্লাহ।
প্রথমবারের মতো পাকিস্তানএর বিপক্ষে জয় পেলো কাবুলিওয়ালারা। সেটাই কিনা বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে।