ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪ |

EN

শত্রু নওয়াজেই কি ভরসা সেনাবাহিনীর!

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, অক্টোবর ২২, ২০২৩

শত্রু নওয়াজেই কি ভরসা সেনাবাহিনীর!
লন্ডনে চার বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনের পর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ (৭৩) নিজ দেশে ফিরেছেন শনিবার। নেতৃত্ব দেবেন পাকিস্তানের আগামী সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের (পিএমএল-এন)। নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক ইতিহাসে পাকিস্তানের ক্ষমতাশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেশির ভাগ সময়ই তার ছিল সাপে-নেউলে সম্পর্ক। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেনাবাহিনী। এমনকি পাকিস্তান ছাড়ার আগেও দুর্নীতির অভিযোগে তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। 

শারীরিক অসুস্থতার কারণে নওয়াজ শরিফকে ২০১৯ সালের নভেম্বরে কারাগার থেকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তিনি তখন লন্ডনে চলে যান। তবে পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। নওয়াজের চিরশত্রুই তাকে অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। হয়তো নওয়াজেই শেষ ভরসা করছে সেনাবাহিনী। এমনকি আবারও তিনি বসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী গদিতে। বিবিসি। 

দেশে ফেরায় পরিস্থিতি কী হতে পারে
গত বছর পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত অনাস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান।  এর পর থেকেই বাড়ছিল নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক তৎপরতা। সর্বশেষ পাকিস্তানের শাসনক্ষমতায়ও ছিল তার দল পিএমএল-এন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তার ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ। তবে নওয়াজের বিরুদ্ধের সব মামলা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। যদিও গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কায়ও নেই তিনি। কারণ আগামী সপ্তাহের শুনানি পর্যন্ত তার জামিনের মেয়াদ রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী গদিতে কি আবার বসবেন নওয়াজ?
পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচনে নওয়াজই হবেন দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী- এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে তার দল পিএলএম-এন। তবে তার আগে কিছু বিষয় তাকে সামাল দিতে হবে। বোঝাপড়ায় আসতে হবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে। কারণ পাকিস্তানের নীতি-নির্ধারণীতে দেশটির সেনাবাহিনীর ভূমিকা অনেক বেশি। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকটের জন্যও এই নেতাকেই দায়ী করে থাকেন অনেকে। তা নিয়ে একটি সমাধানে আসতে হবে। 

নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে?
নওয়াজের প্রধান বিরোধী দল পিটিআই নেতা এখন কারাগারে বন্দি। গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিক্ষোভের পর তার সমর্থকদের অনেকেই এখন কোণঠাসা। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে। ইমরান খানের গ্রেফতারের আগে পরিচালিত জনমত জরিপে তার দল পিটিআই এগিয়ে ছিল। পিটিআই নেতা জুলফি বুখারি মনে করেন এখন নির্বাচনের জন্য আর কোনো ‘লেভেল প্লেইং’ ফিল্ড নেই।

বুখারি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতাকে কিভাবে কারাবন্দি করে রেখেছেন আপনারা? আপনারা যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করেন, তবে দেখবেন ইমরানের ভোটব্যাংক কতটা শক্তিশালী।’

সেনাবাহিনী কি নওয়াজের ওপর ভরসা রাখতে পারবে?
নওয়াজের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ছিল দীর্ঘকালীন শত্রুতা। তবে পাকিস্তানের রাজনীতি পর্যবেক্ষক ওয়াজাহাত মাসুদ মনে করেন, এসবের পরও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী হয়তো নওয়াজকে আরেকটি সুযোগ দিতে চাইছে। মাসুদ বলেন, প্রথমে সেনাবাহিনী ইমরান খানকে নিরাপদ ভেবেছিল। কিন্তু যখনই তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল তখনই ইমরানকে সরিয়ে দিয়েছে।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে নওয়াজের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য নাদিম আফজাল চ্যান বলেন, তিনি (নওয়াজ) ‘ইয়েস স্যার’ বলার মতো ভূমিকা পালন করবেন না। তবে অনেকে মনে করছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে।