দরিদ্র মদ্যপায়ীদের চোলাই মদের পরিবর্তে কম ঝুঁকির বাংলা মদে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার বেশ কিছূ ঘোষণা দিয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের দাম কমানোর পাশাপাশি বাজারে নতুন মোড়কে বাংলা মদ আনা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের আবগারি দফতরের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলছে, চোলাই মদের অবৈধ কারবার ঠেকাতে সস্তায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ আনা হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় সে সব মদ পাওয়া যাবে। প্রথম দফায় ৪৯টি ব্র্যান্ডের বাংলা মদ পাওয়া যাবে; যেগুলোর ৩০০ মিলিলিটারের বোতলের দাম ২৩ টাকা থেকে ৩০ টাকা। তবে সবচেয়ে সস্তা ২৩ টাকায় পাওয়া যাবে ‘গ্যালাক্সি জোশ’ ব্র্যান্ডের বাংলা মদ।

এর আগে, জঙ্গলমহলের মহুয়ার গন্ধ মেশানো বাংলা মদ রাজ্যের আবগারি দফতর আনছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। পরে এই মদের ব্যাপারে দরপত্র আহ্বান করা হয়। যাতে রাজ্যের গরিব মদ্যপায়ীরা চোলাই মদের পরিবর্তে কম ঝুঁকির বাংলা মদের প্রতি আকৃষ্ট হন, সে জন্য সস্তায় বাংলা মদ তৈরির তথ্য জানানো হয়েছিল সরকারি নির্দেশনায়।

সেই অনুযায়ী, বিভিন্ন সংস্থা দরপত্র দেয় এবং শেষ পর্যন্ত আবগারি দফতর ৪৯টি নতুন ব্র্যান্ডের দেশি মদের অনুমোদন দিয়েছে; যেগুলো সস্তায় মিলবে। দফতরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ২০২০ সালের শীতে পাউচ প্যাকে মহুয়া-গন্ধি বাংলা মদ আনার পরিকল্পনা ছিল। তখন ঠিক হয়েছিল, পাউচ প্যাকে ২০ টাকায় বিক্রি হবে ২০০ মিলিলিটার বাংলা মদ। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এবং কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা হওয়ায় বাংলা মদ তৈরির দরপত্র ডেকে উৎপাদনকারী কোম্পানি বাছাই পর্ব শুরুর পর তা স্থগিত হয়ে যায়।

তিনি বলেছেন, এবার সেটাই হল একটু বদল এনে। দাম ৩০ টাকার মধ্যে রেখে প্লাস্টিকের বোতলে ৭০ ডিগ্রির দেশি মদ বিক্রি হবে সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত দোকান থেকে। আবগারি দফতর আশা করছে এর ফলে রাজ্য বেআইনি চোলাই মদের ব্যবসা কমে যাবে। চোলাই মদের বিষক্রিয়ার মৃত্যুর মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।

আনন্দবাজার লিখেছে, চোলাই মদের কারবার ঠেকাতে দাম নিয়ন্ত্রণ যে সবার আগে দরকার, তা বুঝেই আবগারি দফতর ৬০ ডিগ্রির বদলে ৭০ ডিগ্রির মদ আনার পরিকল্পনা করে। সেই সঙ্গে দেশি মদকে আকর্ষণীয় করে তুলতে মহুয়া ও অন্যান্য গন্ধ যোগ করার পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে চালু হয়েছে সস্তার ৪৯টি ব্র্যান্ড।

নতুন সব ব্র্যান্ডের নামও দেওয়া হয়েছে আকর্ষণীয়। মহুয়ার গন্ধ মেশানো বলে যেমন ‘মহুল’ নামে দেশি মদ পাওয়া যাবে, তেমনই ২৮ টাকায় পাওয়া যাবে ‘ফার্স্ট ডোজ’ নামে একটি ব্র্যান্ড। করোনাকালে টিকার সঙ্গে মিলিয়েই এই নামকরণ বলে জানিয়েছেন রাজ্যের আবগারি দফতরের এক কর্মকর্তা। এছাড়াও যে সব সস্তার ব্র্যান্ড যুক্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ‘বাজিগর’, ‘দিলরুবা’, ‘বিরাট’, ‘গ্লোবাস মহুয়া’, ‘বুলবুল’, ‘ঝুমুর’সহ বিভিন্ন নামে সস্তার দেশি মদ।

আবগারি দফতর সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলছে, ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এসব ব্র্যান্ডের মদ উৎপাদন ও বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।