আরও একটি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ। আরও একটি দুর্দান্ত সমাপ্তি। শেষ মুহূর্তে এসে লখনৌ সুপার জায়ান্টসের কাছে ৫ রানের ব্যবধানে হেরে গেলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। রোহিত শর্মাদের হারিয়ে আইপিএলের প্লে-অফের পথে অনেকদুর এগিয়ে গেলো লখনৌ। বলা যায়, নিশ্চিতই করে ফেলেছে, এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি।
লখনৌর শ্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে লখনৌ সুপার জায়ান্টস। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানে থেমে যায়।
এই জয়ের ফলে ১৩ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এলো লখনৌ। সমান ম্যাচে মুম্বাই’র পয়েন্ট ১৪। তারা রয়েছে চতুর্থ স্থানে। জিততে পারলে দ্বিতীয় স্থান নয় শুধু, প্লে-অফও নিশ্চিত হয়ে যেতো তাদের।
শেষ ওভারটা মোটেও কাজে লাগাতে পারেনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। অথচ, শেষ ওভারে ক্রিজে ছিলেন মুম্বাইর দুই দুর্দর্ষ ব্যাটার টিম ডেভিড এবং ক্যামেরন গ্রিন। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১১ রান। সবাই ধরেই নিয়েছিলো এই ম্যাচে নিশ্চিত জিততে যাচ্ছে মুম্বাই।
কিন্তু ভোজবাজির মত পাশার দান উল্টে দিলেন লখনৌ’র বোলার মহসিন খান। বাঁ-হাতি এই মিডিয়াম পেসার আগের দুই ওভারে দিয়েছেন ২১ রান। তার হাতে শেষ ১০ রান রক্ষা করার দায়িত্ব তুলে দেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ক্রুনাল পান্ডিয়া।
শেষ ওভারে এসেই নিজের ক্যারিশমা দেখিয়ে দিলেন মহসিন। দিলেন মাত্র ৫ রান। প্রথম বল ডট, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলে দিলেন ১টি করে রান। চতুর্থ বল ডট। পঞ্চ বলে ১ রান এবং শেষ বলে দিলেন ২ রান। টিম ডেভিড এবং ক্যামেরন গ্রিনের মত ব্যাটারকে শটই খেলতে দেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত মহসিন খানের এই দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে ৫ রানের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লখনৌ সুপার জায়ান্টস। ম্যাচ শেষে মহসিন খান শেষ ওভার নিয়ে বলেন, ‘আমি সব সময় অনুশীলনের সময় যে বলটা করতাম, সেটাই করতে চেয়েছি এবং ক্রুনালকে বলেছি, আমার মত করে বল করতে দাও। এছাড়া আমি স্কোরবোর্ডের দিকেই তাকাইনি। একটাই লক্ষ্য ছিল, যাতে বড় শট খেলতে না পারে। সে লক্ষ্যটা আমার সফল হয়েছে।’
জয়ের জন্য ১৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার মিলেই দলকে জয়ের অনেক কাছাকাছি নিয়ে যান। ৯.৪ ওভারে ৯০ রানের জুটি গড়েন রোহিত শর্মা এবং ইশান কিশান। এ সময় ২৫ বলে ৩৭ রান করে আউট হয়ে যান রোহিত। ১টি বাউন্ডারির সঙ্গে মারেন ৩টি ছক্কার মার।
৩৯ বলে ৫৯ রান করেন ইশান কিশান। ৮ বাউন্ডারির সঙ্গে মারেন তিনি ১টি ছক্কার মার। সুর্যকুমার যাদব কিছুই করতে পারেননি। ৯ বলে ৭ রান করে আউট হয়ে যান। ২০ বলে ১৬ রান করেন নেহাল ওয়াধেরা। ১৯ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন টিম ডেভিড। ১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি। অথচ, শেষ ওভারেই তিনি কোনো ছক্কার মার মারতে পারলেন না।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর শুরুতে বেশ বিপদে পড়েছিলো লখনৌ সুপার জায়ান্টস। ৫ রানে দিপক হুদা, ১৬ রানে কুইন্টন ডি কক, প্রেরক মানকড় শূন্য রানে আউট হন। ৩৫ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ঘূরে দাঁড়ায় লখনৌ। ক্রুনাল পান্ডিয়া এবং মার্কাস স্টইনিজ মিলে গড়ে তোলেন ৮২ রানের জুটি।
৪২ বলে ৪৯ রান করে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন ক্রুনাল পান্ডিয়া। এরপর মাঠে নেমে নিকোলাস পুরান ৮ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। মার্কাস স্টোইজিন ৪৭ বলে অপরাহিত থাকেন ৮৯ রানে। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কার মার মারেন ৮টি। শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে লখনৌ।