কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি সাফজয়ী নারী দলের সদস্য আনুচিং মগিনি ও সাজেদা জুনিয়ররা। নারীদের ক্যাম্প থেকে তাদের বিদায় জানিয়ে দিয়েছে বাফুফে। নারী ফুটবলের ভঙ্গুর অবকাঠামোতে তাদের ফুটবল ক্যারিয়ার প্রায় শেষ।
একমাত্র অপেশাদার নারী লিগ ভরসার নাম হলেও সেই লিগ নিয়েও যে প্রতিবছরই থাকে অনিশ্চয়তা। সাফজয়ী দুজনের সঙ্গে অনূর্ধ্ব ২০ দলের ক্যাম্প থেকেও বাদ দেয়া হয়েছে আরও দুজনকে।
বাফুফে ভবনের বারান্দাতেই হয়ত অবসরে সতীর্থদের সঙ্গে মেতে থাকতেন হাসি ঠাট্টায়। নারী সাফজয়ী দলের সদস্য আনুচিং মগিনির জন্য সেই সময়ে ফিরে যাওয়া হয়ত এখন স্বপ্নাতীত, এক কথা অসম্ভবই।
অথচ জাতীয় দলের সঙ্গে নিয়ম মেনে শনিবার সারাদিন করেছেন বিভিন্ন সেশন। সন্ধ্যা গড়াতেই ফুটবল ক্যারিয়ারে নেমে এল অন্ধকার। তখনও যে জানা ছিল না ওই রাতেই আসবে ক্যাম্প ছাড়ার নির্দেশনা।
টবলার আনুচিং মগিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছে বাড়িতে গিয়ে ভালো করে প্র্যাকটিস কর, পরবর্তীতে ব্যাক করতে পারবা। এটা মেনে নিতে পারব না আমি।
ঠাঁই হারানোর শোক সামলাতেও সময় লেগেছে মগিনির। চব্বিশ ঘণ্টা পর রোববার (২২ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন ক্ষোভ। অভিমানি আনুচিং বিদায় বলে দেন ফুটবলকেই।
ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ে কেন অবসর নিতে হলো তাকে? উত্তর লুকিয়ে কঠিন বাস্তবতায়।
এদেশে জাতীয় দল আর নারী একাডেমি থেকে বাদ পড়া মানেই যেনে ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কা। নেই অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুবিধা। নিজেকে প্রমাণ করে ফিরে আসবেন এমন সুযোগ কম। পারফরম করার একমাত্র প্লাটফর্ম অপেশাদার নারী লিগ। প্রতিবছর তা হবে কিনা সেও এক প্রশ্ন।
তাহলে কোথায় যাবেন আনুচিং মগিনির মতো ঝরে পড়ারা? ওসব নিয়ে অবশ্য মাথা ব্যাথা নেই বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাট্রেজিক ডিরেক্টর পল স্মলির। সহজ উত্তর, দলের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি আনুচিং, সাজেদাসহ অনূর্ধ্ব ২০ দলের আরও দুই ফুটবলার।
ফুটবল ফেডারেশনের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাট্রেজিক ডিরেক্টর পল স্মলি বলেন, দলের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি আনুচিং এবং সাজেদা।
ফুটবলের টানে সাত বছর আগে ছেড়েছিলেন পাহাড়ের মায়া। তবে ইট পাথরের নগর দিতে পারেনি তাদের প্রতিদান। সঙ্গে জীবন-জীবিকা নিয়ে নতুন এক সংগ্রাম।
ফুটবল ফেডারেশনের উইমেন্স উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, আমরা তো কাউকে বাদ দিতে চাই না। এদের পেছনে আমাদের কত এফোর্ট দিতে হয় ফাইনেন্সিয়াল, ফিজিক্যাল, মেন্টাল। নতুন একজনকে তৈরি করতে তো সময় লাগে। ওদেরকেই তো আমরা ধরে রাখতে চাই। কিন্তু ওরা তো সেই জায়গাটা ধরে রাখতে পারছে না।
মগিনির পরিবর্তে জাতীয় দলের ক্যাম্পে রোববার যোগ দিয়েছেন বসুন্ধরা কিংস ও বাংলাদেশি বংশদ্ভুত জাপানি ফুটবলার মাতসুসীমা সুমাইয়া।