নিজেদের ছায়া হয়ে থাকলেন মোহামেদ সালাহ-দারউইন নুনেসরা। দুঃস্বপ্নের মতো এক ম্যাচ গেল ডিফেন্ডার ইব্রাহিমা কোনাতের। এর বিপরীতে দাপুটে ফুটবল খেলল ব্রেন্টফোর্ড। ঘরের মাঠে লিভারপুলের বিপক্ষের দুর্দান্ত জয়ে জাগাল সেরা চারে থাকার আশা।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে সোমবার রাতে ৩-১ গোলে জিতেছে ব্রেন্টফোর্ড। ফরাসি ডিফেন্ডার কোনাতের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যাওয়া দলটি ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইয়োয়ানে উইসার গোলে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অ্যালেক্স অক্সলেইড-চেম্বারলেইনের গোলে ব্যবধান কমায় লিভারপুল। শেষ দিকে ব্রায়ান এমবিউমোর গোলে দারুণ এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রেন্টফোর্ড।
প্রতিপক্ষের মাঠে অষ্টম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় লিভারপুল। সালাহর থ্রু বল পেয়ে গোলরক্ষককে এড়িয়ে এগিয়ে যান নুনেস। ফাঁকা জালে শট নেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার, কিন্তু পেছন থেকে ছুটে এসে গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন বেন মি! হাতছাড়া হয়ে যায় সুবর্ণ সুযোগ।
দশ মিনিট পর নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় ব্রেন্টফোর্ড। কিন্তু বিপজ্জনক জায়গা থেকে হেড একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এমবিউমো।
পরের মিনিটে লিভারপুলের দুই সেন্টার ব্যাকের মাঝ দিয়ে উইসা খুঁজে নেন এমবিউমোকে। গতিতে ভার্জিল ফন ডাইককে পেছনে ফেলে এগিয়ে যান তিনি। তবে কিছুটা এগিয়ে এসে তার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান আলিসন বেকার।
সেই কর্নার থেকেই এগিয়ে যায় ব্রেন্টফোর্ড। দারুণ চেষ্টা করলেও বলের নাগাল পাননি মি। তার পেছনেই থাকা লিভারপুল ডিফেন্ডার কোনাতের পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে! এমন কিছুর জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না আলিসন, কোনো তৎপরতাই দেখাতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক।
২৪তম মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন কস্টাস সিমিকাস। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্রিক ডিফেন্ডারের শটে ব্যর্থ করে দেন ব্রেন্টফোর্ডের স্প্যানিশ গোলরক্ষক দাভিদ রায়া।
তিন মিনিট পর কর্নার থেকে জালে বল উইসা। তবে তিনি নিজেই অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ৩৯তম মিনিটে আরেকটি কর্নার থেকে আবার লিভারপুলের জালে বল পাঠায় ব্রেন্টফোর্ড!
বেশ দূর থেকে শট নিয়েছিলেন উইসা। বল জালে যাওয়ার আগে ছুঁয়ে যায় মি’র শরীর, তিনি ছিলেন অফসাইডে। তাই এবারও গোল মেলেনি।
লিভারপুলের রক্ষণে দারুণ ভীতি ছড়ানো উইসার গোলের অপেক্ষা শেষ হয় একটু পরে। ৪২তম মিনিটে মাটিয়াস ইয়ানসেনের চমৎকার ক্রসে কঙ্গোলিজ ফরোয়ার্ড অসাধারণ হেডে খুঁজে নেন ঠিকানা। বিস্ময়করভাবে কেউই পাহারায় রাখেননি উইসাকে।
তিন পরিবর্তন এনে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্মক শুরু করে লিভারপুল। ৪৮তম মিনিটে প্রতি আক্রমণে চমৎকার ফিনিশিংয়ে জাল খুঁজে নেন নুনেস। তবে তিনি নিজেই অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল!
দুই মিনিট পরেই ব্যবধান কমায় লিভারপুল। ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের দুর্দান্ত ক্রসে অরক্ষিত অক্সলেইড-চেম্বারলেইনের হেড জড়ায় জালে।
৮০তম মিনিটে একটুর জন্য সমতা ফেরাতে পারেননি কোনাতে। কর্নার থেকে তার হেড দূর পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
চার মিনিট পর আবার দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্রেন্টফোর্ড। মাঝ মাঠ থেকে এমবিউমিকে লক্ষ্য করে বাড়ানো বলের কাছে আগে যান কোনাতে। হেড করে একটু সামনে এগিয়ে নেন তিনি। তবে পেছন থেকে তাকে সজোরে ধাক্কা মারেন এমবিউমো, ডিফেন্ডারের পায়ে পাও লাগে তার। পড়ে যান কোনাতে।
বাকিটা সহজেই সারেন এমবিউমা। প্রায় শেষ হয়ে যায় লিভারপুলের হার এড়ানোর আশা। বাকি সময়ে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সফরকারীরা।
এই জয়ে ১৮ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে উঠে এলো ব্রেন্টফোর্ড। ১৭ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে তাদের ঠিক উপরে রয়েছে লিভারপুল।
১৬ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ রয়েছে আর্সেনাল। সমান ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে শিরোপাধারী ম্যানচেস্টার সিটি।