মৌসুমে প্রথম হারের হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে কী, উল্টো আবারও পয়েন্ট হারাল রিয়াল মাদ্রিদ। এবার লিগ ম্যাচে জিরোনার বিপক্ষে অনেক কষ্টে এগিয়ে গিয়েও ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার লা লিগার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। ভিনিসিউস জুনিয়র রিয়ালকে এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা টানেন ক্রিস্তিয়ান স্তুয়ানি।
শেষ দিকে টনি ক্রুস লাল কার্ড দেখায় কিছুটা সময় একজন কম নিয়ে খেলতে হয় রিয়ালকে।
গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লাইপজিগের মাঠেও পুরোটা সময় দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে ছিল রিয়াল, শেষ পর্যন্ত হেরে যায় ৩-২ গোলে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে তো পারলই না, বরং পুরোটা সময় ধুঁকতে দেখা গেল তাদের।
অবশ্য একটি পয়েন্ট পাওয়ায় আবারও বার্সেলোনাকে পেছনে ফেলেছে তারা। ১২ ম্যাচে ১০ জয় ও দুই ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৩২। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা।
শক্তির বিচারে দুই দলের মাঝে পার্থক্য আকাশছোঁয়া হলেও রিয়ালকে সামনে পেলেই যেন জ্বলে ওঠে জিরোনা। লা লিগায় আগের চারবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে দুটিতে হেরেছিল মাদ্রিদের দলটি, সবশেষটি ঘরের মাঠে, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ।
ম্যাচ শুরু হতেই আক্রমণ শাণায় রিয়াল; দারুণ পজিশনে বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন লুকা মদ্রিচ। দশম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে রদ্রিগোর শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান জিরোনা গোলরক্ষক।
১৯তম মিনিটে রিয়ালের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় সফরকারীরা। ডান দিক থেকে আসা সতীর্থের ক্রসে ভালেরি ফের্নান্দেসের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় রিয়াল। চার মিনিট পর ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি তারা; রদ্রিগোর শট পোস্টে বাধা পায়।
৩৮তম মিনিটে দুর্ভাগ্য বাঁধ সাধে জিরোনার সামনে। বাঁ দিক দিয়ে ওঠা প্রতি-আক্রমণে রিয়ালের ডিফেন্ডার দানি কারভাহালের কড়া চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কাটব্যাক করেন ভালেহি। ফাঁকায় বল পেয়ে মিডফিল্ডার এররেরার বুলেট গতির শট থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপায়।
বিরতির পর অনেকটা সময় ধারহীন-এলোমেলো ফুটবলের পর ৭০তম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। ডি-বক্সে ডিফেন্ডারদের বাধা এড়িয়ে ডান দিক থেকে গোলমুখে বল বাড়ান ফেদে ভালভেরদে, আর দারুণ স্লাইডে বল জালে পাঠান ভিনিসিউস।
দুই মিনিট পর বাড়তে পারতো ব্যবধান। রদ্রিগোর ছোট পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে শরীরটাকে ঘুরিয়ে বুলেট গতির শট নেন কিছুক্ষণ আগে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার বদলি নামা মার্কো আসেননিও। অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় হাত বাড়িয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান গোলররক্ষক পাওলো দিনো।
৭৭তম মিনিটে রিয়ালের ডি-বক্সে আসেনসিওর হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। নিখুঁত শটে সমতা টানেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড ক্রিস্তিয়ান স্তুয়ানি।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও হতাশ করেন রদ্রিগো। মারিয়ানো দিয়াসের বাড়ানো বলে তার প্রথম শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক দিনো, তবে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে তালগোল পাকান। রদ্রিগোর দ্বিতীয় দুর্বল প্রচেষ্টা তার গায়ে লাগে, তৃতীয়বারের চেষ্টায় জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
কিন্তু ভিএআরে ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, রদ্রিগো স্কোরিং শট নেওয়ার সময় বলের ওপর হাত ছিল গোলরক্ষকের।
পরের মিনিটে জিরোনার আলেইশ গার্সিয়াকে পেছন থেকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ক্রুস। বাকি সময়ে রিয়ালও পারেনি উল্লেখযোগ্য কিছু করতে।
শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে এখনও অপরাজিত রিয়াল এই নিয়ে আসরে দুটি ম্যাচে পয়েন্ট হারাল।