শুরুতেই এগিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনা আর গোলের দেখা পাচ্ছিল না। রক্ষণ জমাট রেখে আশা ম্যাচে ফেরার আশা বাঁচিয়ে রাখছিল জ্যামাইকা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লিওনেল মেসি মাঠে নামার পর পাল্টে গেল দৃশ্যপট। আরেকটি অনায়াস জয়ে কাতার বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারল আর্জেন্টিনা।
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে শেষ হওয়া প্রীতি ম্যাচে জ্যামাইকাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। হুলিয়ান আলভারেস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর শেষ দিকে জোড়া গোল করেছেন মেসি।
দেশের হয়ে আর্জেন্টিনা অধিনায়কের গোল হলো ৯০টি। মোখতার দাহারিকে (৮৯) ছাড়িয়ে গেলেন মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল এখন আলি দাইয়ি (১০৯) ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর (১১৭)।
হন্ডুরাসকে ৩-০ গোলে হারানো দলে ৮ পরিবর্তন আনলেও আর্জেন্টিনার খেলায় এর প্রভাব পড়েনি খুব একটা। বরাবরের মতোই বল দখল ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল লিওনেল স্কালোনির দল। জমাট রক্ষণের জন্য সেভাবে কোনো পরীক্ষাই দিতে হয়নি পোস্টের নিচে ফেরা এমিলিয়ানো মার্তিনেসকে।
কাতার বিশ্বকাপের আগে নিজেদের সবশেষ প্রস্তুতি ম্যাচের এই জয়ে আর্জেন্টিনার অপরাজেয় থাকার পথচলা দাঁড়াল রেকর্ড ৩৫ ম্যাচে।
নিউ জার্সির রেড বুল অ্যারেনায় শুরুতে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চেপে ধরার চেষ্টা করে জ্যামাইকা। তবে দ্রুতই নিয়ন্ত্রণ নেয় আর্জেন্টিনা। পঞ্চম মিনিটে গোলের প্রথম সুযোগ তৈরি করে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। গিদো রদ্রিগেসের শট কোনোমতে ফিরিয়ে দেন জ্যামাইকা গোলরক্ষক।
চমৎকার এক পরিকল্পিত আক্রমণে ত্রয়োদশ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
নিকোলাস তাগলিফিয়াকোর পাস ধরে সঙ্গে থাকা ড্যামিওন লোকে এড়িয়ে সামনে এগিয়ে যান লাউতারো মার্তিনেস। বাইলাইনের কাছাকাছি গিয়ে দারুণ কাট ব্যাকে খুঁজে নেন আলভারেসকে। তরুণ এই স্ট্রাইকারের আশেপাশে জ্যামাইকার চার খেলোয়াড় থাকলেও, কেউই সেভাবে পাহারায় রাখেননি। অরক্ষিত আলভারেস বাকিটা সারেন অনায়াসে।
সাত মিনিট পর আবার সুযোগ আসে আলভারেসের সামনে। এবার দূরের পোস্টে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার।
৩১তম মিনিটে ডি বক্সে সুযোগ পান রদ্রিগেস। তবে খুব কাছে থেকেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। দুই মিনিট পর দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেন জিওভানি লো সেলসো। তার শটও ছিল না লক্ষ্যে।
প্রথমার্ধে ৬২ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা আর্জেন্টিনা গোলের জন্য ৯ নয় শট নেয় এর তিনটি ছিল লক্ষ্যে। জ্যামাইকা সেভাবে গোলের জন্য কোনো শট নিতে পারেনি। যোগ করা সময়ে ফ্রি কিক থেকে হেড করেন শামার নিকোলসন, সেটিও ছিল না লক্ষ্যের ধারেকাছে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আসে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ। তবে ডি বক্স থেকে দূরের পোস্টে আড়াআড়ি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মার্তিনেস। ৫৫তম মিনিটে তার বদলেই মাঠে নামেন মেসি।
৬৮তম মিনিটে সুযোগ আসে তার সামনে। দুরূহ কোণ থেকে তার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান জ্যামাইকা গোলরক্ষক। পরের মিনিটে একটুর জন্য আলভারেসের থ্রু বলের নাগাল পাননি মেসি।
৮৫তম মিনিটে মেসির উঁচু করে বাড়ানো বলে ঠিক মতো শট নিতে পারেননি তাগলিয়াফিকো। পরের মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে জাল খুঁজে নেন মেসি।
৮৯তম মিনিটে দারুণ ফ্রি-কিকে আবার জালে বল পাঠান আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। জ্যামাইকানদের চমকে দিয়ে গড়ানো শট নেন তিনি, ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক।
হ্যাটট্রিকের সুযোগও এসেছিল, তবে মেসি নামার পর তৃতীয়বারের মতো একজন ভক্ত মাঠে ঢুকে যাওয়ায় সেই আক্রমণ আর শেষ করার সুযোগ পাননি আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।