ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪ |

EN

বিপিএলে এবার বিদেশি ক্রিকেটারের নিবন্ধন উন্মুক্ত

স্পোর্টস ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২

বিপিএলে এবার বিদেশি ক্রিকেটারের নিবন্ধন উন্মুক্ত
ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগের তুমুল প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বিদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধনের নিয়ম শিথিল করছে বিপিএল। আগামী আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যতজন ইচ্ছে বিদেশি ক্রিকেটারের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে এবং যে কোনো সময় তাদেরকে দলে নিতে পারবে।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক সোমবার বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, এখনও চূড়ান্ত না হলেও বিদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তাদের পরিকল্পনা এমনই।

২০১২ সালে শুরু হওয়া বিপিএল নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে এবার। আগামী জানুয়ারিতে যে সময়ে বিপিএল হবে, একই সময়ে চলবে বিগ ব্যাশ, ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লিগ ও এসএ টি-টোয়েন্টি।

এই তিন লিগেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি দেশে-বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে এর মধ্যেই। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লিগ এর মধ্যেই ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে এবং বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ টি-টোয়েন্টি লিগ (আইপিএলকে প্রথম ধরে নিয়ে) হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠেয় দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টি-টোয়েন্টি লিগও বেশ সাড়া ফেলেছে।

বিপিএলের অনেক নিয়মিত বিদেশি ক্রিকেটারই এসব লিগে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। সেখানে বিপিএলের এখনও ফ্র্যাঞ্চাইজিই চূড়ান্ত হয়নি। অনেক অপেক্ষার পর রোববার কেবল ৭ দলের মালিকানার জন্য সম্ভাব্য ৭ প্রতিষ্ঠানের নাম জানানো হয়।

বাস্তবতা বুঝেই তাই এখন নিবন্ধনের নিয়মে পরিবর্তন আনছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে ড্রাফটের বাইরে স্রেফ একজনের সঙ্গেই সরাসরি চুক্তি করতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। তবে ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানালেন, বিদেশিদের ক্ষেত্রে কোনোরকম বাধ্যবাধকতা তারা রাখছেন না।

“বিদেশিদের ব্যাপারে… আপনারা জানেন যে সাউথ আফ্রিকান লিগ, ইউএই লিগ এসবে ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজিরাই দল নিয়েছে। বেশিরভাগ বিদেশি খেলোয়াড় ওইদিকে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেছে। আমরাও বিপিএলটা আগপিছ করতে পারছি না জাতীয় দলের ব্যস্ততার জন্য।”

“বিদেশি খেলোয়াড়ের রেজিস্ট্রশনে বাধ্যবাধকতা রাখব না। উন্মুক্ত রাখব। ধরুন কেউ তিনদিনের জন্য এসে খেলে গেল, তার বদলি আরেকজন আসতে পারে। এরকম চিন্তা-ভাবনা আছে আর কী।”

একাদশে বিদেশি ক্রিকেটার খেলতে পারবেন সর্বোচ্চ চারজনই। একাদশে রাখতেই হবে সর্বনিম্ন দুইজন বিদেশি।

আগামী আসর  ও পরের আরও দুই আসরে বিপিএলকে এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে ধারণা গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিবের। এরপর থেকে চিত্র বদলের আশা তার।

“বিদেশি ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে আমরা কোনো লিমিটেশন রাখতে চাচ্ছি না। আইপিএল ছাড়া অনেক টুর্নামেন্ট এখন ওভারল্যাপ করছে। কাজেই বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়াই এখন কঠিন।”

“অনেকে বলছেন, এই সময়টায় টুর্নামেন্ট করছি কেন… কিন্তু আসলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কমিটমেন্টগুলো যেরকমভাবে আছে, এটা পেছানো সম্ভব নয়। পরের বছর ও তার পরের বছরও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি আমাদের হতে হবে। এরপর থেকে আর সমস্যা হবে না, আমরা হয়তো টুর্নামেন্ট একটু এগিয়ে এনে হয়তো আরেকটু ভালো সময়ে করতে পারব।”

ড্রাফটে ক্রিকেটারদের সম্ভাব্য পারিশ্রমিকের খসড়া করা হয়েছে। ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানালেন, বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক থাকবে ৮০ লাখ টাকা। দেশের ক্রিকেটারদের জন্য ড্রাফটে ক্যাটাগরি থাকবে ৭টি। ‘এ’ গ্রেডে পারিশ্রমিক ৮০ লাখ, ‘বি’ গ্রেড ৫০ লাখ, ‘সি’ গ্রেড ৩০ লাখ, ‘ডি’ গ্রেড ২০ লাখ, ‘ই’ গ্রেড ১৫ লাখ , ‘এফ’ গ্রেড ১০ লাখ, ‘এইচ’ গ্রুপ ৫ লাখ।”

সরাসরি চুক্তির ক্ষেত্রে কোনো ধরাবাধা পারিশ্রমিক নেই। ক্রিকেটারদের সঙ্গে দলগুলির আলোচনায় সেটা চূড়ান্ত হবে।

বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারের সঙ্গে সরাসরিই চুক্তি হবে ধরে নিয়ে ‘আইকন’ ক্রিকেটার রাখা হচ্ছে না।

দল নিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের পর বরিশালের মালিকানার জন্য মনোনীত হয়েছে ফরচুন বরিশাল স্পোর্টস লিমিটেড, খুলনা দলের জন্য মাইন্ডট্রি লিমিটেড, ঢাকা দলের জন্য প্রগতি গ্রিন অটো রাইস মিলস লিমিটেড, সিলেটের ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, রংপুরের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের টগি স্পোর্টস লিমিটেড, চট্টগ্রামের ডেল্টা স্পোর্টস লিমিটেড ও কুমিল্লার জন্য কুমিল্লা লেজেন্ডস লিমিটেড।

ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানান, ১১টি প্রতিষ্ঠান থেকে বাছাই করে এই ৭টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে আহবান করা হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, ক্রিকেটাদের পারিশ্রমিকের গ্যারান্টি মানিসহ অন্যান্য আর্থিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলতে। প্রতি বছর দেড় কোটি টাকা করে তিন বছরের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি একবারেই জমা দিতে হবে দলগুলিকে।

টাকা জমা দিতে ১৪-১৫ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে আপাতত। তবে পুরনো ও পরীক্ষিত ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ক্ষেত্রে সময়সীমা একটু ‘রিল্যাক্সড’ থাকবে বলেও জানান গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব।

আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী বিপিএল শুরুর সম্ভাব্য সময় ঠিক করে রেখেছে বিসিবি। চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রথমবারের মতো টানা তিন আসরের সম্ভাব্য সময়ও নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের আসর হবে ৬ জানুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং ২০২৫ সালের আসর ১ জানুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি।