বিশ্বকাপের মহড়া হিসেবে দেখা হচ্ছিল ভারতের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজকে। সেই মহড়ার প্রথম পরীক্ষায় মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচ ছিল মোহালিতে। আর সেই ম্যাচ দেখিয়ে দিল ২০৮ রান করেও মোটেও নিরাপদ নয় রোহিত শর্মার ভারত।
মূলত বোলারদের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে পাহাড়সমান রান করেও ম্যাচটা হারতে হয়েছে ভারতকে। গ্রিন-ওয়েডদের দাপটে শেষ পর্যন্ত চার উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। সেই সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজে অজিরা ১-০ তে এগিয়ে গেল। বিশ্বকাপের আগে এই হার কিন্তু রীতিমতো চিন্তা বাড়াল ভারতীয় শিবিরে।
এদিন টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল শুরুটা ভালো করতে পারেননি। রোহিত শর্মা রান পাননি। শুরুতে ঝোড়ো ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু হ্যাজলউডকে অবিবেচকের মতো মারতে গিয়ে আউট হন ভারত অধিনায়ক রোহিত (১১)।
এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ছিলেন বিরাট কোহলি। মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তার ব্যাট ম্যাজিক দেখাবে এমনটাই ভেবেছিলেন অনেকে। কিন্তু কোহলি তার ভক্তদের আজ হতাশই করেন। এলিসের বলে গ্রিনের হাতে লোপ্পা ক্যাচ তুলে ডাগ আউটে ফেরেন বিরাট (২)। মনে হচ্ছিল যেন কোহলি ক্যাচ প্র্যাকটিস করাচ্ছেন। কোহলি ফেরার পর ইনিংস গোছানোর কাজ করেন লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব। দুই ব্যাটসম্যান মিলে ৬৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন।
লোকেশ রাহুল ৩৫ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন। চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস। ঠিক যখন মনে হচ্ছিল লোকেশ রাহুল বিপজ্জনক হয়ে উঠবেন, ঠিক সেই সময়েই তাকে ফিরতে হয়। ভারতকে ২০৮ রানে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে আসল নায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। ৩০ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক। ৭টি বাউন্ডারি ও ৫টি ছক্কা হাঁকান তিনি। কিন্তু মোহালির রাতটা যে পান্ডিয়ার নয়। দিনের শেষে ট্র্যাজিক নায়ক হিসেবেই থেকে যেতে হলো এ অলরাউন্ডারকে।
ভারতের রান তাড়া করতে নেমে অ্যারন ফিঞ্চ ও ক্যামেরন গ্রিন মারমুখী মেজাজে শুরু করেন। ফিঞ্চ ১৩ বলে ২২ রান করেন। ইনিংসের প্রথম বলেই ফিঞ্চ ভুবনেশ্বর কুমারকে গ্যালারিতে ফেলেন। তার পরে সময় যত এগিয়েছে অজিদের ভয়ংকরই দেখিয়েছে। অক্ষর প্যাটেল বোল্ড করেন ফিঞ্চকে। তাতেও দমেননি ক্যামেরন গ্রিন। তিনি মারমুখী ব্যাটিং করেন। ভারতীয় বোলারদের রীতিমতো শাসন করেন গ্রিন। দলের রান যখন ১০৯, তখনই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা গ্রিনকে ফেরান অক্ষর প্যাটেল। স্টিভ স্মিথ (৩৫) ও ম্যাক্সওয়েল (১) দ্রুত আউট হন উমেশ যাদবের বলে।
অন্যদিকে অক্ষর প্যাটেল আউট করেন ইনগ্লিসকে (১৭)। দলের যখনই উইকেট দরকার, তখনই অক্ষর প্যাটেল উইকেট দিয়েছেন রোহিতকে। কিন্তু ওয়েড (৪৫*) ও ডেভিডের (১৮) দাপটে ভারত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। টিম ডেভিড অবশ্য ম্যাচ শেষ করে যেতে পারেননি। শেষ ওভারে তিনি আউট হন চাহালের বলে। বাকি কাজটা সারেন কামিন্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ২০৮/৬ (পান্ডিয়া- ৭১*, রাহুল ৫৫, এলিস ৩০-৩)
অস্ট্রেলিয়া ২১১/৬ (গ্রিন ৬১, ওয়েড ৪৫*, অক্ষর ১৭-৩)
অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে জয়ী