Can't found in the image content. বায়ার্ন পরীক্ষায় আবারও ফেল বার্সেলোনা | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ |

EN

বায়ার্ন পরীক্ষায় আবারও ফেল বার্সেলোনা

স্পোর্টস ডেস্ক | আপডেট: বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২

বায়ার্ন পরীক্ষায় আবারও ফেল বার্সেলোনা
বার্সেলোনার জন্য আজ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার ম্যাচটা ছিল একটা অ্যাসিড টেস্ট। চলতি মৌসুমে ছয় ম্যাচে ২০ গোল করা দলটা শীর্ষ মানের ইউরোপীয় দলের সামনে কেমন করে তার পরীক্ষা, জাভি হার্নান্দেজের অধীনে উজ্জীবিত দলটা বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে শেষ তিন সাক্ষাতে ১৪ গোল হজমের প্যারানয়া কাটাতে পারে কি না তার পরীক্ষা। ছিল ইতিহাস বদলানোর চ্যালেঞ্জও। তবে সে পরীক্ষা বা চ্যালেঞ্জ কোনোটিতেই উতরে যেতে পারেনি বার্সা। সে পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার যত মনোবল ছিল বার্সার, বায়ার্নের পাঁচ মিনিটের ঝড়ে যে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে!

বায়ার্ন মিউনিখের মাঠ থেকে জাভির দল ফিরেছে ২-০ গোলে হেরে। এই হারের ফলে ইউরোপের শীর্ষ প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে আবারও ইউরোপা লিগে নেমে যাওয়ার শঙ্কাও পিছু নিয়েছে দলটির। দিনের অন্য ম্যাচে যে ইন্টার মিলান এই একই ব্যবধানে ভিক্তোরিয়া প্লজেনের বিপক্ষে জিতে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কাতালানদের!

অথচ ম্যাচের শুরুটা বলছিল ভিন্ন কথাই। শেষ কিছু দিনের চেনা ছন্দে না থাকুক, বার্সেলোনাই ছিল প্রথমার্ধের সেরা দল। বায়ার্ন প্রতি আক্রমণে ত্রাস ছড়াচ্ছিল বটে, কিন্তু বড় সুযোগগুলো সৃষ্টি করছিল বার্সাই। প্রথমার্ধে বার্সার তিন তিনটি অন টার্গেট শটের বিপরীতে বায়ার্নের একটাও না থাকা সাক্ষ্য দিচ্ছিল তারই। 

৯ মিনিটে পেদ্রির শটটা দুর্বল ছিল বটে, তবু বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার সেটা ঠেকাতে ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে গিয়েছিলেন; শেষমেশ কোনোক্রমে ঠেকিয়েছিলেন পা দিয়ে। তবে পরের দুটো শট দারুণ দক্ষতাতেই ঠেকাতে হয়েছে বায়ার্ন রক্ষণকে। মার্কোস আলনসোর ক্রসে অনেকটা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে লেভান্ডভস্কির দারুণ হেডটাও অবিশ্বাস্যভাবে ঠেকিয়ে দেন নয়্যার। এর আগে নিজের দোষেও গোলবঞ্চিত থেকেছেন লেভা। এর মিনিট তিনেক আগেই দেম্বেলের পাস থেকে পাওয়া সুযোগটা যে মিস করেছেন, তেমন সুযোগ আরও ১০০ বার পেলে অন্তত ৯০ বার গোলেই রূপ দিতেন পোলিশ এই স্ট্রাইকার।

সম্ভাব্য দুটো সুযোগ ঠেকিয়ে নয়্যার তার কাজটা করেছিলেন; তবে শুরু থেকে যেভাবে খেলছিল বার্সা, তাতে তাদের ঠেকাতে বায়ার্ন রক্ষণকেও তাদের কাজটা ভালোভাবেই সারতে হতো। সেটা তারা করেছেও। ৪৩ মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে বক্সে আনমার্কড লেভান্ডভস্কির শট দারুণ এক স্লাইডিং ট্যাকলে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন নুসাইর মাজরাভি। এ তো গেল কেবল বায়ার্নের ঠেকিয়ে দেওয়া শটের ফিরিস্তি, নিজেদের দোষে লেভান্ডভস্কির সেই সুযোগটাসহ আরও কত যে সুযোগ নষ্ট করেছে বার্সা, তার কোনো ইয়ত্তাই নেই। সে কারণেই বার্সা কাড়ি কাড়ি সুযোগ পেয়েও প্রথমার্ধে ম্যাচটা শেষ করে দিতে পারেনি। পারেনি দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও। রাফিনিয়া প্রথমার্ধের একটা মিস মনে করিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও মিস করে বসেন আরও একটা সুযোগ।

বার্সা যা পারেনি, ৫০ থেকে ৫৫ মিনিটে সফরকারীদের চোখে আঙুল দিয়ে বায়ার্ন বলে দিয়েছে যেন, ‘দেখো, এভাবে সুযোগ কাজে লাগাতে হয়’। ৫০ মিনিটে লিওন গোরেৎস্কার করা শটটা কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়েছিলেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান। সেই কর্নারেই সর্বনাশ হলো বার্সার। ইয়োশুয়া কিমিখের কর্নার বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন রাফিনিয়া, ফাঁকায় পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে ভোলেননি লুকাস এরনান্দেজ।

সেই গোলের পরই যেন মনোবল যা ছিল ভেঙে গেল বার্সেলোনার। দ্বিতীয় গোলটা যেভাবে এল, হতোদ্যম বার্সার রক্ষণ ভুলে যাওয়াটা যেন মনে করিয়ে দিচ্ছিল সেই ৮-২ গোলের হারকেই। সেদিন তো এভাবে বার্সেলোনার রক্ষণের মাঝে হেঁটে হেঁটেই গোল করেছিল বার্সা। জামাল মুসিয়ালা মাঝমাঠ থেকে উঠে আসছিলেন বার্সা বিপদসীমার দিকে, রক্ষণে একটু ফুটো দেখেই বলটা ছেড়ে দেন লেরয় সানেকে। এরপর বার্সার দুই ডিফেন্ডার তার টিকিটিরও নাগাল পাননি। চোখের পলকে বায়ার্ন এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

এদিন বার্সার দিক থেকে ভাগ্যও যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। নাহয় ৬৩ মিনিটে নয়্যারকে বোকা বানিয়ে পেদ্রির নেওয়া শটটা কেন প্রতিহত হবে পোস্টে? একটা সম্ভাব্য পেনাল্টি আবেদনও বিরস মুখে নাকচ করেছেন রেফারি। সবকিছুর মিশেলে বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে পরীক্ষাটায় ফেলই করে বার্সা। ২-০ গোলে এই হারে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা সেই দুর্ভেদ্য দুর্গই থেকে যায় বার্সেলোনার কাছে।

তবে এই ম্যাচের এই সব আক্ষেপের চেয়ে বড় হয়ে উঠতে পারে ইউরোপার শঙ্কা। গ্রুপের অন্য ম্যাচে জয় নিয়ে ইন্টার বার্সার সমান ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে। একটু পা হড়কালেই যে টানা দ্বিতীয় বারের মতো ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতা নেমে যেতে হবে ইউরোপার। সে শঙ্কাটা বার্সেলোনার কোচ, খেলোয়াড়, ভক্ত-সমর্থকদের মনে উঁকি দিলেও দিতেই পারে। ঘর পোড়া গরু যে সিঁদুরে মেঘ দেখলেও ভয় পায়!