প্রথম মিনিটেই পোস্টে লাগল বল। গোল না হলেও সেই শটই হয়তো বেঁধে দিল সুর। এরপর একের পর এক আক্রমণে লিভারপুলকে কাঁপিয়ে দিল নাপোলি। ইয়ুর্গেন ক্লপের দলটিকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান শুরু করল সেরি আর ক্লাবটি।
‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে বুধবার রাতে ৪-১ গোলে জিতেছে নাপোলি। জোড়া গোল করেন পিওতর জিলিনস্কি, একটি করে জিওভানি সিমেওনে ও আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক জাম্বো আনগিসা। লিভারপুলের একমাত্র গোলটি করেন লুইস দিয়াস।
প্রিমিয়ার লিগে ধারাবাহিকতা খুঁজে ফেরা লিভারপুলের ইউরোপ সেরার মঞ্চে শুরুটা হলো হতাশার। গত আসরের ফাইনালে দারুণ ফুটবল খেলেও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে যাওয়া দলটি নাপোলির বিপক্ষে ছিল যেন নিজেদের ছায়া হয়ে।
দিয়েগো আরমান্দো মারাদোনা স্টেডিয়ামে নাপোলির শুরুটা হয় দুর্দান্ত। প্রথম মিনিটেই তারা তৈরি করে গোলের সুযোগ। ভিক্টর ওসিমহেনের শট ব্যর্থ হয় পোস্টে লেগে, খেলার বয়স তখন স্রেফ ৪৫ সেকেন্ড।
সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও হয়তো আত্মবিশ্বাস নড়ে যায় লিভারপুলের। প্রথমার্ধের পুরোটা জুড়েই ভুগতে দেখা যায় তাদের।
পঞ্চম মিনিটে সফল স্পট কিকে নাপোলিকে এগিয়ে নেন পিওতর জিলিনস্কি। জেমস মিলনারের হ্যান্ডবলের জন্য পেনাল্টি দেন রেফারি।
অষ্টাদশ মিনিটে দ্বিগুণ হতে পারতো ব্যবধান। ওসিমহেনের স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন আলিসন। আগেরবার উল্টো দিকে ডাইভ দেওয়া লিভারপুল গোলরক্ষক এবার কোনো ভুল করেননি। ওসিমহেনকে সফরকারী ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি।
২৮তম মিনিটে দলকে আরও পিছিয়ে পড়া থেকে বাঁচান ফন ডাইক। নাপোলির জর্জিয়ান ফরোয়ার্ড খাভিচা কাভারাৎসখেলিয়ার শট গোললাইন থেকে বাঁচান তিনি।
তিন মিনিট পরেই স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলেন আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক জাম্বো আনগিসা। জিলিনস্কির সঙ্গে ‘ওয়ান অন ওয়ান’ খেলে জাল খুঁজে নেন ক্যামেরুনের এই মিডফিল্ডার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেকে জিওভানি সিমেওনের গোলে ব্যবধান আরও বাড়ে। ভীষণ বাজে দিন কাটানো জো গোমেজকে এড়িয়ে বাইলাইনের কাছ থেকে আনগিসা খুঁজে নেন সিমেওনেকে। ফাঁকা জালে বল পাঠান আর্জেন্টাইন এই স্ট্রাইকার।
বিরতির পর গোমেজকে আর নামাননি লিভারপুল কোচ। তবে এবারও শুরুতেই গোল হজম করে সফরকারীরা। দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটেই স্কোরলাইন ৪-০ করেন জিলিনস্কি। তার প্রথম শট আলিসন ফিরিয়ে দিলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টা রুখতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক।
৪৯তম মিনিটে অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে ব্যবধান কমান লুইস দিয়াস। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে দূরের পোস্ট ঘেঁষে বল ঠিকানায় পাঠান কলম্বিয়ান এই ফরোয়ার্ড।
১২ মিনিট পর তার জোরাল হেড ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন নাপোলি গোলরক্ষক। এরপর খেলার গতি কমে যায় বেশ। রক্ষণেই বেশি মনোযোগ দেয় স্বাগতিকরা। তবে সেভাবে তাদের চেপে ধরতে পারেনি লিভারপুল। তৈরি করতে পারেনি গোলের তেমন কোনো সুযোগ।
‘এ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে রেঞ্জার্সকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে আয়াক্স। তাতে প্রথম রাউন্ডেই জমে গেছে নক আউট পর্বে যাওয়ার লড়াই।