একই সঙ্গে ব্যাটিং কিংবা বোলিং দিয়ে দলে সুযোগ পাবেন, এমন অলরাউন্ডার খুব বেশি নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। বিরল এই ঘরানার একজন, সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের হয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে রাজত্ব করছেন অনেক দিন ধরেই। তাকে দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া ও বেন স্টোকসের কাতারেই রাখেন বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম।
ইংল্যান্ডের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক স্টোকস। দেশের হয়ে অসাধারণ কিছু পারফরম্যান্স আছে তার। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর আরও দুর্দান্ত হয়ে উঠেছেন ভারতের পান্ডিয়া। এশিয়া কাপে রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে নিজের সামর্থ্য আরও একবার দেখিয়েছেন তিনি। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছক্কায় দলকে জয়ের বন্দরে নেওয়া বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান ১৭ বলে খেলেছেন ৩৩ রানের ইনিংস।
পান্ডিয়ার সেই পারফরেম্যান্সের সূত্র ধরেই সোমবার আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি মাঠে সংবাদ সম্মেলনে শ্রীরাম বললেন, এই মানের অলরাউন্ডার থাকা যে কোনো দলের জন্যই বাড়তি সুবিধা।
“টি-টোয়েন্টিতে অলরাউন্ডারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। চার ওভার বল করতে পারে, পাঁচ বা ছয়ে ব্যাটিং করতে পারে এবং ছক্কা মারতে জানে, এমন একজন ক্রিকেটার যে কোনো দলের জন্য অমূল্য সম্পদ। হার্দিক পান্ডিয়া ও বেন স্টোকস তো বেশি আসে না। এরকম ক্রিকেটার যে দলে আছে, সেই দলের ভারসাম্য থাকে।”
“কখনো একজন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান খেলাতে পারে, কখনো বোলার। কোথায় যেন পড়লাম, হার্দিক পান্ডিয়ার মতো অলরাউন্ডারর থাকায় ভারত দলে ১২ জন খেলছে। আমাদেরও সাকিব আছে। ৪ ওভার করতে পারে, টপ অর্ডারে ব্যাটিং করে। অবশ্যই এটা একটা বাড়তি সুবিধা।”
দুবাইয়ে অনুশীলনে সাকিবের বোলিংয়ে একটু ভিন্নতা চোখে পড়েছে। রান আপ একটু দ্রুত করছেন, দ্রুত ডেলিভারি দিচ্ছেন দ্রুত। ব্যাপারটা কিভাবে দেখছেন শ্রীরাম?
“সাকিব বুদ্ধিমান ক্রিকেটার। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের গতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে, প্রতিনিয়ত উন্নতি করতে হবে। আর এই কাজটায় সাকিব খুব ভালো।”
“লম্বা সময় ধরে যারা ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে, তার পেছনে সিক্রেট একটাই, তারা নিজেদের খেলার উন্নতি করে যায়। উন্নতির মধ্য দিয়ে বোলার বা ব্যাটসম্যানকে পরাস্ত করে। যদি সাকিব এটা করে, এর কৃতিত্ব তারই। এই জন্য সে ভালো একজন খেলোয়াড়।”
সাকিব কতটা ভালো সেটা প্রতিপক্ষ দলে থেকেও টের পেয়েছেন শ্রীরাম। বাঁহাতি অলরাউন্ডার টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হওয়ায় কাজ করছেন আরও নিবিড়ভাবে। সাকিব সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার পর সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার বুঝতে পারছেন, বাংলাদেশের বাকি ক্রিকেটাদের চেয়ে তার পার্থক্য কোথায়।
“মূল পার্থক্য এক্সপোজার। সে ভিন্ন ভিন্ন লিগে খেলে, ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে খেলে। অনেক বছর ধরে আইপিএলে খেলছে। সিপিএলে খেলেছ, বিশ্বজুড়ে খেলছে। আমার মনে হয়, একটা বড় পার্থক্য এসব। এটাই অন্যদের সঙ্গে সাকিবের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের যতটা সম্ভব এক্সপোজার দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে আমাদের, যেন তারা তাড়াতাড়ি শিখতে পারে।”