২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক বেন স্টোকস। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে কঠিন চাপের মুখে ৯৮ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ টাই করেন তিনি। পরে সুপার ওভারেও নার্ভ ধরে রেখে ইংল্যান্ডকে এনে দেন প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা।
অথচ গল্পটা একটু এদিক-সেদিক হলেই, ইংল্যান্ডের বদলে সেদিনের ফাইনালে নিজের জন্মভূমি নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে খেলতে পারতেন স্টোকস। হয়তো কিউইদেরই জেতাতেন প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা। কিন্তু নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের অদূরদর্শিতার কারণে ইচ্ছা থাকার পরেও খেলতে পারেননি স্টোকস।
নিউজিল্যান্ডের সাবেক তারকা ব্যাটার রস টেলরের আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে এই ঘটনা। ১৯৯১ সালে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জন্ম স্টোকসের। পরিবারের সঙ্গে ১২ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান তিনি। তবে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে অভিষেকের আগেই চেষ্টা করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য।
২০১০ সালে ডারহামের হয়ে কাউন্টি খেলতে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন টেলর। তিনি লিখেছেন, 'তখন তার বয়স ১৮ কি ১৯ হবে এবং অবশ্যই সে একজন কিউই ছিল। কথার ফাঁকে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তার নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার ইচ্ছা আছে কি না। সে তখন বেশ আগ্রহ দেখিয়েছিল।'
'তাই আমি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জাস্টিন ভনকে বার্তা পাঠাই যে, এই স্টোকস ছেলেটা দারুণ প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটার এবং নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার ইচ্ছা রয়েছে তার। তখন ভন আমাকে বলেন, সে চাইলে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে পারে। পরে দেখা যাবে কী হয়।'
কিন্তু এই কথায় যে স্টোকস জাতীয় দলের নিশ্চয়তা পাবেন না তা বুঝতে পেরেছিলেন টেলর, 'আমি তাকে (ভন) বললাম, তাকে পাওয়ার জন্য আমাদেরকে আরও ভালো প্রস্তাব দিতে হবে। আবার যদি সিঁড়ির নিচের ধাপ থেকে শুরু করতে হয় তাহলে সে রাজি হবে না। শেষ পর্যন্ত তা সত্যিই হয়নি।'
এক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড যে আরও বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারতো তা জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, 'নিউজিল্যান্ড দলে খেলার আগ্রহ ছিল স্টোকসের... যদি নিউজিল্যান্ড বোর্ড আরেকটু নমনীয় আচরণ করতো এবং তাকে নিশ্চয়তা দিতো। কিন্তু ভন সেটি দিতে আগ্রহী ছিল না।'
যে কারণে আর কিউইদের জার্সিতে খেলা হয়নি স্টোকসের। সময়ের পরিক্রমায় ঠিক ইংল্যান্ড জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন এ পেস বোলিং অলরাউন্ডার। এরই মধ্যে ইংলিশদের হয়ে খেলেছেন ১০৫ ওয়ানডে ও ৮৩টি টেস্ট ম্যাচ। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ জিতিয়ে ইংলিশদের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন স্টোকস।