আগেই জানা গিয়েছিল, ভারতের কোচের দায়িত্ব ছাড়ছেন রবি শাস্ত্রী। দেশটির সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই তার বিদায়ী মঞ্চ হতে যাচ্ছে। এদিকে বিরাট কোহলিদের নতুন কোচ হিসেবে এত দিন রাহুল দ্রাবিড়ের নাম শোনা গেলেও এখন জোরালো গুঞ্জন এমএস ধোনিকে নিয়ে। বিশ্বকাপে ধোনির ‘মেন্টর’ হওয়া যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই জোরালো গুঞ্জন উঠেছে।
এদিকে, শাস্ত্রীর বিদায়ের খবর চাউর হতেই জল্পনা শুরু হয় তার উত্তরসূরি কে হবেন তা নিয়ে। এত দিন সবাই একজনের দিকেই আঙুল তাক করে রেখেছিলেন। সবাই ধরেই নিয়েছিল, গত কয়েক বছর ধরে দেশের তরুণ ক্রিকেটারদের সামলানো, জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির প্রধান এবং দলের ভেতরে-বাইরে ভীষণভাবে গ্রহণযোগ্য রাহুল দ্রাবিড়কেই নিয়ে আসা হবে। এমনকি সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরে ভারতের মূল দলেরও কোচ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
তবে সমস্যা হচ্ছে, পরিবারের কাছ থেকে এতটা সময় বাইরে-বাইরে কাটাতে দ্রাবিড় রাজি হবেন কি না, পরিষ্কার নয়। আর তাই নতুন একটি নামের দিকে এখন সবার নজর -মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার এমন দাবিই করেছে।
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধোনির ‘মেন্টর’ হওয়া যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। ক্রিকেটবোদ্ধাদের মতে, ধোনি এখনো নিয়মিত ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আইপিএল খেলছেন, তারপরও বিসিসিআইয়ের অনুরোধে দলের মেন্টর হওয়ার দায়িত্ব নিতে রাজি হওয়ার অর্থ, তিনিও হয়তো ক্রিকেট-পরবর্তী জীবন নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন।
তবে পাকাপাকিভাবে জাতীয় দলের কোচ হতে গেলে তাকে অবশ্য চেন্নাই সুপার কিংসের হলুদ জার্সি খুলে রাখতে হবে। ধোনি-ঘনিষ্ঠরা যা নিয়ে বলছেন, কতদিনই বা আর তিনি খেলবেন? খুব জোর হয়তো এটাই শেষ বছর। কোহলিদের ড্রেসিংরুমে ঢুকতে গেলে সিএসকের সঙ্গে অন্য কোনোভাবেও যুক্ত থাকাও চলবে না। তাহলেই ফের স্বার্থ-সংঘাত নামক বাউন্সার ধেয়ে আসবে।
তবে ধোনি ভারতের কোচ হলেও কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রথমত, তিনি সদ্য অবসর নিয়েছেন। এখন যারা ভারতের হয়ে খেলছেন, তাদের অনেকের কাছেই বন্ধুর মতো, যেখানে সাধারণত মনে করা হয় কোচ যেন অন্তত পাঁচ-ছ’বছর আগে খেলা ছেড়ে থাকেন।’
দ্বিতীয়ত, ধোনি সাদা বলের ক্রিকেটের রাজা এবং বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। ট্রফি জেতায় অদ্বিতীয়। দু’টা বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, একাধিক আইপিএল কিছু বাদ নেই। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ধোনির আগ্রহ এবং মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তার টেস্ট নীতি এবং কোহলির টেস্ট নীতিতেও বিস্তর ফারাক। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ স্পিন-মন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। অধিনায়ক কোহলির অস্ত্র অতি আগ্রাসন আর পেস বোলিং। তাই যতই ধোনি-কোহলি দীর্ঘকালের সুসম্পর্ক থাকুক, টেস্ট মঞ্চে ক্রিকেটীয় নীতিতে ঠোকাঠুকি লাগতেই পারে।
এদিকে, কোহলির সঙ্গে রবি শাস্ত্রীর সখ্য কারো জানতে বাকি নেই। আর তাই ভারত কাপ্তান শাস্ত্রীকে যে রেখে দেওয়ার শেষ চেষ্টা করবেন, তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। তবে যদি নতুন কোচই আসে, কে আসবেন, কেউ জানে না। ধোনি এলে এক রকম। দ্রাবিড় এলে অন্যরকম। নাকি বিদেশি কোচকে নিয়ে আসা হবে? অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে নতুন গুরুর সম্পর্ক কেমন যাবে? সময়ই বলে দেবে!