যৌন হয়রানির অভিযোগে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গেছে পাকিস্তান ক্রিকেটে। সম্প্রতি এক নারী ক্রিকেটার ভিডিওবার্তায় পাকিস্তানের জাতীয় পর্যায়ের কোচ নাদিম ইকবালের বিপক্ষে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তাকে সাময়িক বরখাস্তও করেছে। বর্তমানে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
মুলতান অঞ্চলের কোচ ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার নাদিম। এই ঘটনায় তিনি বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির কোনো শর্ত ভঙ্গ করেছেন কি না, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এখন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্তা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কোনো প্রকার অপরাধের তদন্ত আমরা করতে পারব না, কারণ এটা পুলিশের কাজ। কিন্তু আমরা এখন দেখছি আমাদের সঙ্গে করা চুক্তির কোনো শর্ত তিনি ভেঙেছেন কি না।’
৫০ বছর বয়সী এই কোচ খেলোয়াড়ি জীবনে ৮০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছিলেন। এক সময় তাকে ওয়াকার ইউনিসের চেয়েও ভালো বোলার হিসেবে দেখা হতো স্থানীয় গণমাধ্যমে। ন্যাশনাল ব্যাংক দলের হয়ে এক ম্যাচে ২০ রান দিয়ে ৭ উইকেট শিকারের কীর্তি ছিল তার। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে তিনি নাম লেখান কোচিংয়ে। তবে এখন তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে তার কোচিং ক্যারিয়ার পড়ে গেছে হুমকির মুখে।
যৌন হয়রানির শিকার নারী ক্রিকেটারটি সম্প্রতি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার অভিযোগে বলা হয়েছে, কয়েক বছর আগে যখন মুলতানে নারী দলের ট্রায়ালে গিয়েছিলেন তিনি, সেখানকার তৎকালীন কোচ ছিলেন নাদিম।
তার ভাষ্য, ‘সে আমাকে জাতীয় দলে জায়গা করে দেওয়ার ও ক্রিকেট বোর্ডে কোনো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশা দেখিয়ে আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সে আমাকে যৌন হয়রানির শিকার বানায়, তাতে তার বন্ধুরাও জড়িত ছিল। সে সেইসবের ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখে, পরে সেসব দিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইলও করেছে।’
মুলতান অঞ্চলে নারী ক্রিকেটারদের যৌন হয়রানির নজির অবশ্য এবারই প্রথম নয়। ২০১৪ সালে ৫ নারী ক্রিকেটার মুলতান ক্রিকেট ক্লাবের কর্তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন। ক্রিকেটাররা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত এই ক্লাবের কর্তারা তাদের কাছ থেকে যৌন সুবিধা নিয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।