জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, আগস্ট ৩০, ২০২১
পিরোজপুরের
নাজিরপুর উপজেলায় স্কুলশিক্ষক স্বামী ও তার পরিবারের
সদস্যদের নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়েছেন নাজমুন
নাহার রুবী (২৬) নামে এক
গৃহবধূ। বর্তমানে নাজমুন নাহার রুবী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
আছেন।
নির্যাতিতা
রুবী উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের ঝিলবুনিয়া গ্রামের আবুল বাশারের মেয়ে।
তার স্বামী আমিনুল একই উপজেলার শাঁখারীকাঠী
ইউনিয়নের মাদুলিহারানো গ্রামের জালাল মোল্লার ছেলে এবং উপজেলার
৫০নং মধ্য হোগলাবুনিয়া সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাদের আনিকা ও আরিফা নামে
তিন ও দেড় বছরের
দুটি মেয়ে সন্তান আছে।
গৃহবধূ
জানান, প্রায় চার বছর আগে
তাদের বিয়ে হয়। সে
সময় তার বাবা তার
স্বামীকে সাধ্যমত উপহার দেন। কিন্তু বিয়ের
পর থেকেই স্বামী ও তার পরিবারের
লোকজন যৌতুকের জন্য তাকে চাপ
দিতে থাকেন। এমন অবস্থায় কয়েক
দফায় বাবার কাছ থেকে ৩
লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে
এনে দেন স্বামীকে। এরইমধ্যে
তাদের দুটি মেয়ে সন্তান
জন্ম নেয়। এদিকে
দুটি সন্তানই মেয়ে হওয়ায় এবং
যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাসুর-ননদরা তাকে প্রায়ই শারীরিক
নির্যাতন করতে থাকেন। এর
ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২৭
আগস্ট) সকালে ওই গৃহবধূকে তার
স্বামী-ভাসুরসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বেদম মারধর
করেন। এতে তার পা
কেটে যায় ও মারাত্মক
জখম হয়। এ অবস্থায়
তাকে কোনো চিকিৎসা ও
খাবার না দিয়ে শ্বশুরবাড়ির
লোকেরা দিনভর ঘরের একটি কক্ষে
আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পরের
দিন সন্ধ্যায় পুলিশ সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার
করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্বামী
আমিনুল ইসলাম মোবাইলফোনে জানান, মনোমালিন্যের জেরে স্ত্রীর সঙ্গে
একটু হাতাহাতি হয়েছে। তবে তার (স্ত্রী)
পায়ের আঘাত বেশি, তা
বুঝতে পারেননি।
উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইশিতা সাধক
জানান, গৃহবধূ রুবীর পায়ে ধারালো কিছু
দিয়ে আঘাতের ক্ষত রয়েছে। এ
ছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন
স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নাজিরপুর
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুজ্জামান
জানান, বাবার ফোন পেয়ে পুলিশ
শ্বশুরবাড়ি থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার
করেছে। তবে ভিকটিমের পক্ষ
থেকে এখনও কোনো অভিযোগ
দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।