জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কীটনাশক নিয়ে ঘুরছিলেন সোহাগ ফকির নামের এক যুবক। স্থানীয় মুরব্বিদের কাছ থেকে আশানুরূপ কোন ফলাফল না পেয়ে বুধবার সকালে জমির কাগজপত্র ও কীটনাশক ব্যাগে নিয়ে সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয়ে যান তিনি।
তার শাশুড়ির জায়গায় প্রতিবেশী বেল্লাল ফকির জোরপূর্বক দালান ঘর নির্মাণ করছে। তখন তিনি বাধা দিয়েও ঘর নির্মাণ কাজ ঠেকাতে পারেননি। তাই জায়গা জমি সংক্রান্ত ঝামেলায় এসিল্যান্ডের কাছ থেকে আশানুরূপ ফলাফল না পান তাহলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেন বলে দাবি ঐ যুবকের।
এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া চরপাড়া গ্রামে।
ডুমুরিয়া ইউনিয়নের তাহশিলদার চিরঞ্জীব বিশ্বাস জানান, সোহাগের দাবি শ্বশুর শাহজাহান খা মারা যাওয়ার পর ঝনঝনিয়া মৌজার প্রায় ২ বিঘা জমি কৌলত সুত্রে মালিক তার শ্বাশুড়ি রাশিদা বেগম। কিন্তু ওই সম্পত্তিতে প্রতিবেশী বেল্লাল শেখ জোরপূর্বক দালাল ঘর নির্মাণ করছেন। নির্মাণ কাজে বাধা দিয়েও ঠেকাতে না পেরে স্থানীয় মুরব্বীদের দ্বারস্থ হয় সোহাগ। কিন্তু তারা কোনো ভালো ফলাফল দেয়নি। সেই দুঃখে সোহাগ কাগজপত্র ও কীটনাশক নিয়ে এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে হাজির হন। তখন সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেদারুল ইসলাম তার সমস্যার কথা জানতে চান। তখন সোহাগ কাঁদতে কাঁদতে বিস্তারিত ঘটনা জানান। পরে এসিল্যান্ড দেখতে পান ওই কাগজপত্রের ব্যাগে একটি বোতল রয়েছে। তখন জোরপূর্বক ব্যাগটি নিয়ে কীটনাশকের বোতলটি দেখতে পেয়ে নিয়ে নেয়। পরে বোতলটি নষ্ট করে ঐ যুবককে নিজের গাড়িতে করে তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
তিনি আরো জানান, এসিল্যান্ড সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় মুরব্বীদের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের কাগজপত্র দেখতে চান। তখন কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন এসএ ও বিআরএসে সোহাগের শাশুড়ির নামে কোন রেকর্ড হয়নি। সেই সম্পত্তির কিছু রেকর্ড হয়েছে একই গ্রামের হান্নান ফকিরের নামে। হান্নান ফকিরের ছেলে বেলাল ফকির যেখানে দালান ঘর নির্মাণ করছে সেই জায়গাটি দুই পক্ষের কারো নয়। ৯১৮ দাগের সেই সম্পত্তি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। তখন সেই নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন এসিল্যান্ড। এছাড়া সোহাগ নামের ঐ যুবক বুঝিয়ে আত্মহত্যার পথ থেকে বিরত থাকতে বলেন।
সোহাগ ফকির নামের ওই যুবক বলেন, কাগজপত্র সঠিকভাবে না বোঝার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে বেছে নিতে চেয়েছিলাম। পরে এসিল্যান্ডকে বিষয়টি জানানোর পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ঘরের নির্মাণকাজ বন্ধ করেন তিনি। সেই সঙ্গে আমাকে আত্মহত্যার পথ থেকে বিরত থাকতে বলেন। তখন তাকে কথা দেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেবো না। এছাড়া বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেদারুল ইসলাম বলেন, সোহাগ নামের ওই যুবক ভুল বুঝে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চেয়েছিল। তখন তাকে বুঝিয়ে এই কাজ থেকে বিরত থাকতে বলি। তখন সেও বিষয়টি বুঝে আত্মহত্যার পথ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া সরকারের জমিতে নির্মাণাধীন দালান ঘরের কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।