ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ১৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬০ কেজি ওজনের আলোচিত অজগরটি মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ সময় আরও দুটি সাপ সেখানে অবমুক্ত করা হয়।
সোমবার বিকালে মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সরোয়ার, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং বন বিভাগের স্টাফদের উপস্থিতিতে সাপগুলো অবমুক্ত করা হয়।
বন বিভাগ বলে, স্থানীয় সাংবাদিকের ফেসবুকে সাপটির ভিডিও পোস্ট করলে অনেকেই খোঁজ নেন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জাকছড়া লেবুবাগান থেকে ১৪ ফুট লম্বা ও ৬০ কেজি ওজনের সাপটি বন থেকে উদ্ধারের পর এর সুস্থতা নিশ্চিত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গত ১২ ফেব্রুয়ারি একটি বার্মিজ অজগর সাপ চা বাগানের ভেতরে দেখতে পান কিছু চা শ্রমিক। তখন সেই সাপের পেছনে পেছনে গিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন কয়েকজন। পরে সেই সাপের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তখন দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
অনেকের দাবি, দেশের মধ্যে এই সাপটিই সবচেয়ে বড়। এ নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার কোনো ওপায় না থাকলেও গবেষক ও পরিবেশ কর্মীদের দাবি, এত বড় সাপ তারা বাস্তবে কখনও দেখেননি। শুধু বিদেশি সিনেমাতেই দেখেছেন।
লাউয়াছড়া পুঞ্জির আদিবাসী নেতা সাজু মার্চিয়াং জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সাপটিকে দেখা যায় আলোচিত অজগর সাপটি লাউয়াছড়ার পার্শ্ববর্তী জাগছড়া এলাকার লেবুবাগানে। সোমবার সেই আলোচিত সাপসহ তিনটি অজগর লাউয়াছড়া বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও সাপ গবেষক মোহাম্মাদ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, কিছু দিন আগে আমি যখন সাপটিকে ফেসবুকে দেখি; ধারণা করছিলাম ২০ ফুটের বেশি। যদি তাই হয়, তবে এটি দেশে আমার দেখা সবচেয়ে বড় সাপ। তবে সোমবার বন বিভাগের কাছ থেকে জানতে পারলাম লাউয়াছড়ার পার্শ্ববর্তী জাকছড়া লেবুবাগান উদ্ধারকৃত ১৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬০ কেজি ওজনের মতো।
বিভাগীর বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, অজগরটিকে একটি লেবুবাগান থেকে উদ্ধার করি। পরে সেটিকে রেসকিউ সেন্টারে রাখা হয়। আলোচিত অজগর সাপসহ তিনটি অজগর সাপ আমরা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করি।
তিনি আরও বলেন, লাউয়াছড়া বন্যপ্রাণীর জন্য একটি ভালো জায়গা। আমাদের সবার উচিত এদের রক্ষা করা এবং লাউয়াছড়াকে নিরাপদ ও প্রাণিবান্ধব রাখা। বন বিভাগ লাউয়াছড়া নিয়ে খুবই আন্তরিক। পরিবেশের জন্য সাপ খুবই প্রয়োজনীয়।