সুনামগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে রাস্তায় লাশ নিয়ে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ। এর মধ্যে একটি গাড়ি সেই মরদেহকে চাপা দিয়ে এগিয়ে গেল। গাড়িটিতে বসা ছিলেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে গাড়িটি উপজেলার সহকারী কমিশনারের। গতকাল সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের পাগলাবাজার এলাকায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ করেছেন, এখানে ইউএনও’র গাড়ি আসলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এই ঘটনায় গাড়ির চালক দ্রুত সরে যেতে চাইলে মরদেহের উপর গাড়ি তুলে দিয়েছে।
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় চুরির মামলায় আটকের পর জামিনে মুক্তি পাওয়ার ১১দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন উজির মিয়া নামে একজন। তার মৃত্যুর পর স্বজনরা অভিযোগ করেন, আটক অবস্থায় পুলিশ তাকে নির্যাতন করেছে। এর ধকলেই তিনি অসুস্থ হন এবং মারা যান।
স্বজন ও এলাকাবাসী উজির মিয়ার মরদেহ নিয়ে বিকেল ২টার দিকে অবস্থান নেয় পাগলা বাজার এলাকায়। তারা অভিযোগ করেন, শান্তিগঞ্জ থানার তিন এসআই থানা হাজতে নির্যাতন করেন উজিরকে।
তবে, ভিডিওতে দেখা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার সখিনা আক্তারের গাড়ি আসে ঘটনাস্থলে। জনতা গাড়িটিকে সামনে যেতে বাধা দিলে চালক না থেমে রাস্তায় রাখা উজির মিয়ার লাশকে চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সে সময় জনতা রাস্তায় নেমে এলে তাদের ওপর দিয়েও চালিয়ে যাওয়া হয় গাড়িটি। তবে সে সময় তারা বাধা না দিয়ে রাস্তা ছেড়ে দেয়।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী উজির মিয়ার চাচা মখলেছুর রহমান বলেন, লাশটা রাস্তায় রাখা। ইউএনও সাহেব তো নামিয়া আমরার কথা শুনতে পারতা। কিন্তু তাইন গাড়ি দিয়া মরা লাশটারে চাপা দিয়া গেলা। আমরা এমন ইউএনও চাই না।
জানতে চাইলে স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, মরদেহকে গাড়ি চাপা দেয়া হয়নি। উত্তেজিত জনতা আমার গাড়ির দিকে হামলা চালায় এবং গাড়ির কাচে আঘাত করতে থাকে। এ সময় ড্রাইভার লাশটির পাশ কাটিয়ে চলে যায়। যারা এই অভিযোগ করছেন সেগুলো মিথ্যা। এমন কিছু সেখানে হয়নি।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম আরটিভি নিউজকে বলেন, ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক এর দায় তাকেই নিতে হবে। প্রশাসন এর দায় নিবে না। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লাশের উপর দিয়ে গাড়ি ওঠার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে। এমনটা হওয়ার কথা নয়।