একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসিরদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিএসএমএমইউ-তে মর্গ না থাকায় ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সৈয়দ কায়সারের ছোটভাই সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘উনি প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো লাশ বুঝে পাইনি। লাশ বুঝে পেলে উনাকে মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করা হবে।’
সৈয়দ কায়সারকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও বহাল থাকে। তবে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আপিল করেন তিনি।
এর আগে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারকে সাতটি অভিযোগে প্রাণদণ্ড দেয়। এর মধ্যে ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড; অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার চারটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আরও তিনটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে তাকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
মুসলিম লীগের সাবেক এই নেতা একসময় বিএনপি করলেও পরে এরশাদের (প্রয়াত) জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী হন তিনি।
গত ২০১৩ সালের ১৫ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর একই দিনই তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গণহত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। এরপর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।
বয়স ও শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় তাকে জামিন দেওয়া হলেও ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার দিন তাকে কারাগারের কনডেম সেলে পাঠানো হয়।