ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

রায়ের আগে যা বলেছিলেন ওসি প্রদীপের বড় ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১, ২০২২

রায়ের আগে যা বলেছিলেন ওসি প্রদীপের বড় ভাই
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকাল ৪টার পর কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এ রায় ঘোষণা করেন। 

বরখাস্ত ওসি প্রদীপ টেকনাফ মডেল থানায় যোগদানের পর থেকে মাদক নির্মূলের আড়ালে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তিনি অবৈধভাবে পেশিশক্তি প্রদর্শন করতে থাকেন।

কিছু দিন যেতে না যেতেই তাকে টাকার নেশায় পেয়ে বসে। ইয়াবা ব্যবসায়ী ছাড়াও আর্থিকভাবে সচ্ছল নিরীহ পরিবারগুলোকে টার্গেট করেন প্রদীপ। এর পর তাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে, অনেক লোকজনকে ক্রসফায়ার দিয়ে এবং ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হন।
 
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে দাখিল করা সিনহা হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বরখাস্ত ওসি প্রদীপের সৎ ভাই রণজিত দাশ তাই মনে করেন, অপরাধ করলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
 
প্রদীপ দাশের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার উত্তর সারোয়াতলী গ্রামে। মৃত হরেন্দ্র দাশের ৫ ছেলের মধ্যে ওসি প্রদীপ হলেন চতুর্থ সন্তান।  ৫ ভাই ও ৭ বোনের মধ্যে রণজিত দাশ সবার বড়।
 
সোমবার দুপুরের দিকে রণজিত দাশ বলেন, কারও একার অপরাধের দায় তো সবাই নিতে পারে না। তবুও আত্মীয়স্বজন সবার কাছে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে আমাদের।

কক্সবাজারের মহেশখালী থানা থেকে ২০ অক্টোবর ২০১৮ সালে ওসি হিসেবে টেকনাফ মডেল থানায় যোগ দেন প্রদীপ।

অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ওসি প্রদীপ টেকনাফ থানায় যোগদানের পর তার নেতৃত্বে ও নির্দেশে শতাধিক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় বহুলোকের মৃত্যু হয়েছে। 

ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অপরাধ প্রক্রিয়া ছিল কোনো ঘটনায় মাদক উদ্ধার হলে অথবা টার্গেট কোনো ব্যক্তিকে মাদক দিয়ে ফাঁসানো হলে (ফিটিং মামলা) প্রথমত আসামি বা ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন। এর পর স্থানীয় কিছু শ্রেণির লোকজনসহ তার নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের জন্য দেনদরবার করা হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ক্রসফায়ার না দেওয়ার শর্তে আদায় করা হতো। প্রাপ্ত টাকার পরিমাণ আশানুরূপ বা চাহিদা অনুযায়ী হলে ভিকটিমকে ক্রসফায়ারে না দিয়ে মাদক উদ্ধার দেখিয়ে ওই ব্যক্তির বা আসামির আত্মীয়স্বজনদের মামলার আসামি করা হতো।

এ ক্ষেত্রে নারী, বৃদ্ধ, কিশোর-কিশোরী কেউ তার আক্রোশ থেকে রেহাই পেত না। এমনকি নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নও করা হতো বলে তদন্তে জানা যায় এবং এ ব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতে মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।