রংপুর র্যাব দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় এক কিশোর হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার দুপুরে রংপুর র্যাব-১৩ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ মইদুল ইসলাম।
তিনি জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার কশিগাড়ী গ্রামের পাঁচ মাথা মোড়ের নিকট পরিত্যক্ত হোটেলে একজন ১৬ বছরের কিশোরের পায়ের রগ কেটে ও জবাই করে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে রেখে যায়। ঘটনাটি ২৯ জানুয়ারি শনিবার এলাকার লোকজনের মুখে মুখে প্রচার হলে একই এলাকার রুমিজা খাতুন (৪১) নিহত তার একমাত্র ছেলে মো. রিসফু হু ইয়া ইয়া ওরফে রিসান (১৬) বলে শনাক্ত করেন।
র্যাব জানায়, মোছাঃ রুমিজা খাতুন বলেন তার ছেলে দিনাজপুর জেলার রাণীগঞ্জ বাজার আল-হেরা ইসলামী প্রি-ক্যাডেট স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনার পাশাপাশি রাণীগঞ্জ বাজারে একটি ভ্রাম্যমাণ খাবার হোটেলে পার্ট টাইম কাজ করত। ২৮ জানুয়ারি রাতে তার বাবার ওষুধ আনার জন্য রানীগঞ্জ বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর দীর্ঘসময় চলে গেলেও সে বাসায় না ফেরায় তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে বাড়ীর সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে লোাকজনের মুখে শুনে সে উক্ত স্থানে গিয়ে তার একমাত্র ছেলের লাশ দেখতে পায়। পরবর্তীতে রুমিজা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে মর্মে মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব ১৩ ঘটনার বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে গত ৩০ জানুয়ারি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন জায়গা হতে চাঞ্চল্যকর কিশোর হত্যার রহস্য উদঘাটন করে হত্যার সাথে জড়িত ঘোড়াঘাট এলাকার বিল্লাল উদ্দিনের পুত্র মো. স্বাধীন উদ্দিনসহ (১৯) আরও ২ কিশোরকে গ্রেফতার করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. স্বাধীন উদ্দিন বর্ণনা করে যে, সে প্রায় দশ মাস আগে ভিকটিমকে প্রতি মাসে সুদের বিনিময়ে টাকা ধার দেয়। ভিকটিম প্রথম তিন মাস সুদের টাকা পরিশোধ করলেও পরিবর্তীতে সুদের টাকাসহ মূল টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। উক্ত টাকাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় ভিকটিমের সাথে মো. স্বাধীনের দ্বন্দ্ব হয়। এরই জের ধরে গত ২৭ জানুয়ারি রাতে স্বাধীন উদ্দিন এবং তার ২ জন কিশোর বন্ধুকে সাথে নিয়ে রিসানকে কশিগাড়ী গ্রামের পাঁচ মাথা মোড়ের নিকট পরিত্যক্ত হোটেলে যেতে বলে। সেখানে আসামি স্বাধীন ভিকটিমের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে না পেলে রাগান্বিত হয়ে তার সাথে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে দেয়। রিসান চিৎকার করলে স্বাধীনের এক কিশোর বন্ধু ভিকটিমের মুখের ভিতর বালু দিয়ে চেপে ধরে। এ সময় অপর কিশোর তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিমের পায়ের রগ কেটে দেয়। গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তাস্তর করা হচ্ছে বলে র্যাব জানায়।