নারায়ণগঞ্জের জাইন নিটওয়্যার লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত কারখানাটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাইন নিটওয়্যার লিমিটেডের দুই নম্বর ইউনিটের সুইং সেকশনে প্রথমে আগুন দেখা যায়। আগুন দেখে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা মালিক ও পুলিশকে জানায়। ধোঁয়া দেখে আশপাশের লোকজন জানালার কাচ ভেঙে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সোনারগাঁ ও বন্দর স্টেশনের চারটি ইউনিট এসে কাজ শুরু করে। ধোঁয়া এবং উৎসুক জনতার ভিড়ের কারণে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়।
কারখানার সুইং সেকশন ইনচার্জ হাবিব বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল। শুরুতেই আগুন নিভিয়ে ফেলা যেত। কিন্তু কারখানা বন্ধ থাকায় কেউ ছিল না। তাই আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস সময়মতো এলেও আশপাশে পানির সংকট থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।’
সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আকরাম হোসেন বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। আমাদের সোনারগাঁ ইউনিটসহ ডেমরা, আদমজী, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ স্টেশনসহ ও ঢাকার সদর দপ্তর থেকে মোট ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। রাত ৯টার দিকে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর নেই। তবে ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা আছে।’
কারখানার নির্বাহী পরিচালক শফিউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়েই দ্রুত ফায়ার সার্ভিস উপস্থিত হয়। এখানে আমাদের কারখানার পৃথক ভবনে মোট ছয়টি ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি ভবনের দ্বিতীয় তলা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এত দ্রুত ছয়টি ইউনিটে আগুন ছড়িয়ে পড়াটা আমাদের আশ্চর্যজনক মনে হয়েছে। এখানে শতভাগ রপ্তানিপণ্য উৎপাদন হয়। বিভিন্ন ইউনিটে রপ্তানির জন্য তৈরি অনেক পণ্য ছিল। মূলত পোলো শার্ট, জ্যাকেট, ট্রাউজার উৎপাদন করা হয়। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের ধারণা, প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, ‘নিটওয়্যার কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করছি আমরা। তবে ছুটির দিন থাকায় শ্রমিকেরা ভেতরে ছিলেন না। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর আমরা পাইনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের মোট ১৩টি ইউনিট কাজ করেছে। কী কারণে আগুন লেগেছে তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।’