কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দিদার হোসাইন (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রকে দেশীয় অস্ত্র (বাটাল) দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দিদার হোসাইন উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের উত্তরপাড়ার আবুল হোসেনের ছেলে। সে শিলাইদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
জানা যায়, প্রায় দেড় মাস আগে কাঠমিস্ত্রি বাবুর সঙ্গে নিহত দিদারের বাগ্বিতণ্ডা হয়। সে সময় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়েছিল। এ ঘটনার জেরে দিদার তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গতকাল রাত ৯টার দিকে বাবু মিস্ত্রির দোকানে যায়। এ সময় তাঁদের মধ্যে পুনরায় বাগ্বিতণ্ডা হয়। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে বাবুর বাটালের আঘাতে দিদার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্কুলছাত্র দিদার হোসাইনকে হাতুড়ি ও বাটাল দিয়ে মারধর এবং কুপিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষরা। এতে সে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। দিদারের শরীরের বুকের বামপাশের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী খোরশেদপুর বাজারের আল মদিনা ফার্নিচারে প্রোপাইটরের কাঠমিস্ত্রি সুজন আহমেদ বলেন, গতকাল রাতে দেখলাম দিদার কিছু লোকজন নিয়ে আসল। আসার একটু পরেই লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল সবাই। আজ সকালে শুনলাম দিদার মারা গেছে।
নিহতের বাবা আবুল হোসেন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে ছেলেকে প্রকাশ্যে মারধর ও বাটাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। আমি এলাকার বাইরে থাকি। তাই বিস্তারিত জানতে পারিনি। এ বিষয়ে মামলা করা হবে। আমি হত্যাকারীদের সবার ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার শরিফ উদ্দিন বলেন, বাবু ও দিদারের পূর্বশত্রুতা ছিল। গতকাল রাতে দিদার কয়েকজনকে নিয়ে বাবুর দোকানে গিয়েছিল। সেখানে হাতাহাতির একপর্যায়ে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আকিবুল ইসলাম বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে সমবয়সী প্রতিপক্ষের লোকজন দিদারকে হত্যা করেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
থানার পরিদর্শক আরও বলেন, ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো মামলা করা হয়নি। ফলে কাউকে আটকও করা যায়নি।