পর্যটন মৌসুম শুরু হলে প্রতি বছর দেশ বিদেশের হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। এসব ভ্রমনে আসা পর্যটকদের কেনাকাটার প্রধান চাহিদা হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রী। জাহাজঘাট সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশেই বিক্রি হয় রোহিঙ্গাদের দেওয়া বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ ।
দামে সস্তা হওয়ায় পর্যটকরা হাতছাড়া করতে চায়না। তবে দামে সস্তা হলেও বেশ কিছু পণ্য সামগ্রী নিম্মমানের। দেখতে হুবহু আসল মনে হলেও বাস্তবে ক্রয় করে ঠকছেন পর্যটক ক্রেতারা।
২২ ডিসেম্বর (বুধবার) বিকাল ও সন্ধ্যা বেলায় সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ঘাট এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে এসব চিত্র দেখা যায়।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেশ বিদেশের সেন্টমার্টিনগামী হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে। গত দুই বছর কোভিড- ১৯ এর কারণে বিভিন্ন বিধি নিষেধ থাকায় পর্যটক সংখ্যা তেমন না হলেও এবছর উপছে পড়ছে পর্যটক। সেন্টমার্টিনে তিল ধরনের ঠাঁই নেই। প্রতিদিন চলাচল করছে সাতটি পর্যটকবাহী জাহাজ। জাহাজের ধারন ক্ষমতা ২৫০-৩৫০ হলেও প্রায়ই জাহাজ অতিরিক্ত পর্যটক বহন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গোপসাগর পার হয়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছে। সকাল সাড়ে নয়টায় দমদমিয়া জাহাজ ঘাট ত্যাগ করে দুপুর একটার দিকে সেন্টমার্টিন পৌঁছে। বিকাল সাড়ে তিনটায় আবার ফেরত আসে। এর মধ্যে কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন, গ্রীন লাইন, এমভি ফারহান, বে ক্রুজ, এমভি ফারহান, এমভি ফারহান-২ অন্যতম। প্রতিটি জাহাজের টিকেট মুল্য আসা-যাওয়া সাড়ে আট'শ থেকে তেরো'শ টাকা পর্যন্ত। যা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রায় পর্যটকের।
এদিকে সেন্টমার্টিন থেকে আসা পর্যটকদের প্রধান চাহিদা এদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেওয়া ত্রান ও বার্মিজ আচারসহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রী। এসব পন্য হাত বাড়ালেই যত্রতত্র পাওয়া যায়। এসবের পণ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে সুজি প্যাকেট, কম্বল, বিভিন্ন কোম্পানীর টয়লেট সাবান, মাদুর, ছাতা, ভোজ্য তৈল, বিভিন্ন কোম্পানীর শ্যাম্পু, স্টিলের পাত্র, স্যাভলন, পাউডার, স্প্রে, টুটপেষ্ট, টুটব্রাশ ইত্যাদি রকমের পন্য।
এসব পন্য রোহিঙ্গাদের ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হয়। তা থেকে অনেকে অল্প অল্প বিক্রি করে দেয়। যা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা সংগ্রহ করে জাহাজ ঘাটের পথে বসিয়ে বিক্রি করেন। তবে এসব পন্যের মধ্যে প্রায়ই পন্য অতি নিম্ম মানের হওয়ায় ক্রয় করে ঠকছেন পর্যটকরা। এসব পন্যের উপরে লেভেল- ২ লিখা থাকে। সস্তায় কিনতে পারায় পর্যটকরা পন্যের মান যাচাই না করে ক্রয় করেন।
সাধারন মহল মনে করছেন, এই নিম্মমানের পণ্য সামগ্রী কিনে পর্যটকরা যেমন ঠকছেন, তেমনি টেকনাফের বদনাম হচ্ছে। তাই রোহিঙ্গাদের পন্য সামগ্রী পর্যটন এালাকায় বিক্রি থেকে বিরত রাখতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চাই।