জেলার মাঠ জুড়ে শীতের সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি। কপি আবাদে এবার বাম্পার ফলনে লাভের মুখ দেখেছেন কৃষকরা। বাজারে ভাল দাম পেয়ে খুশি তারা।
এবার বগুড়ায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে কপি চাষ হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১৫০ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ১২২০ হেক্টর জমিতে। ফুলকপি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার উৎপাদন হয়েছে ৩২ হাজার ৯৪০ টন আর বাঁধাকপি উৎপাদন হয়েছে ২৮ হাজার ৫২০ টন। ফূলকপি ও বাঁধাকপি মিলিয়ে জেলায় উৎপাদন হয়েছে ৬১ হাজার ৪৬০ টন।
কৃিষ সম্প্রসাণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচলক এনামুল হক জানান. গত শীত মৌসুমে কপিতে ভাল দাম পাওয়ায় এবার কপি চাষে আগ্রহ বেড়েছে। কপি মৌসুমের শুরুতে কপির দাম ছিল আকাশ চুম্বি। তখন বিক্রি হয়েছে ১৭০০ টাকা থেকে ১৯০০ টাকা মন। মাঝে কপির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার দাম নেমে আছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা মন। এখন গতকাল মহাস্থান হাটে কপি বিক্রি হয়েছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মন। শিবগঞ্জের কৃষক সোলইমান জানান, এখন কপি সরবরাহ কমে এসেছে। তাই দামও বাড়তে শুরু করেছে।
ভাল দাম পাবার আশায় প্রথমে একবার আগাম কপি চাষ করেছে। অতিদ্রুত সেই কপি বাজারে এনে ১০০ টাকা থেকে দেড়শ’ টাকা কেজি দরে কপি বিক্রি করেছে। চাষ করা শীতকালীন এই সবজি কপি দ্বিতীয় বার চাষ করে করেছে। আগাম কপি চাষ করে তারা ১৭০০ টাকা থেকে ১৯০০ টাকা মন দরে কপি বিক্রি হয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন জেলার মহাস্থান হাটে ভোর থেকে শীত কালিনসবজি চাষিরা তাদের উৎপাদিত কপিসহ অণ্যন্য ফসল নিয়ে হাটে হাজির হয়। ভোরের আলো ফোটার সাথে-সাথে কৃষক ও পাইকারদের হাঁক-ডাকে হাট মুখর হয়ে ওঠে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ট্রাক ভর্র্তি করে বিভিন্ন জেলার নিয়ে যাওয়ার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষা করতে থাকে। এ হাট থেকে প্রতিদিন হাজার-হাজার মন কপিসহ সকল ধরনের সবজি চলে যায় দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে।
মহাস্থান পাশের এক কৃষক আব্দুস সামাদ জানান- প্রতি বিঘায় এবার ফুলকপি চাষে খরচ হযেছে ২০ থেকে ২৩ হাজার টাকা। আগস্ট মাসে কপির চারা রোপন করে ২ মাসের মধ্যে আকারে ছোট হলেও কপির ফলন পেতে শুরু করে। সেই সময় কপি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। বর্তমানে জেলার মহাস্থান হাটে পাইকারিতে প্রতি মন হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০ হাজার টাকা ।
হাটে বিক্রি করতে আসা কৃষক শাহাজাদা জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুল থাকায় কপির আকার ও ওজন দু’টোই বেড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারি কৃষি অফিসর ফরিদুর রহমান বাসসকে জানান, গতবছর থেকে কপিতে কৃষক ভাল দাম পাওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে কপি চাষ হয়েছে। মহাস্থান হাটের কৃষক আব্দুল্লাহ জানান, আমন ও বোরোর মাঝখানের সময়টাতে জমি পড়ে থাকে। এই সময়টাতে কপির চাষ করে তারা প্রচুর আয় করেন। তারা কপিতে ভাল দাম পেয়ে খুশি।
সুত্র: বাসস