চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন দলের নেতারা।
তবে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রদানকারী ও আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদেরকে প্রকাশ্যে সভায় বিষোদ্গার করেছেন সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলা) আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অসামাজিক, অযোগ্য ও অথর্ব বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের নুরুল হক ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, সতর্কতার সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কারণ কয়েক দিন আগে দেখলাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের সবাই ফেল, এটাতো মেনে নেওয়া যায় না। তবে আমাদের অযোগ্য লোকের হাতে যদি কিছু দেওয়া হয় তাহলে রেজাল্ট এটা। সুনামগঞ্জ-১ আসনেও আমি জানি না কি হয়? কিছু অসামাজিক, অথর্ব কিছু লোকের হাতে সেই কাজটি করা হয়েছে। আমি জানি না কীসের বিনিময়ে এই কাজটি করা হয়েছে। বুঝতে একটু সময় লাগবে। আমার মনে আমাদের সকলের মিলে এটা বোঝা উচিত। এই বিষয়ে আমাদের আওয়ামী লীগের, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। এর প্রতিকার আপনারা পারবেন, যেহেতু আপনারা দেশ স্বাধীন করেছেন। আপনারাই পারবেন, আমরা নতুন প্রজন্ম আপনাদের সঙ্গে আছি। আমি আর কথা বাড়াবো না।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাফাত উল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় এমপি রতনের বক্তব্য প্রদানের সময় অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটসহ অন্যান্য অতিথিগণ। এমপি রতনের নিজ দল বিরোধী এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ মুরাদ বলেন, একজন সংসদ সদস্য এভাবে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না। তিনি প্রকাশ্যে সভায় আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অসামাজিক, অযোগ্য ও অথর্ব বলে তাদের ভোটের ক্ষতি করছেন। এমপির বক্তব্যই প্রমাণ করে তিনি প্রতিটি ইউনিয়নে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। বিষয়টি আমরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ও মনোনয়ন বোর্ডকে জানাব।