টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি পাতে সিলেট নগরীর নিচু এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে সিলেট নগরবাসী বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়তে হয়েছে ভূক্তভোগীরা। তবে নদ-নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে থাকায় বন্যা কবলিত উপজেলা গুলোতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সিলেট নগরের উপশহর, তের রতন, সোবহানীঘাট, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। জলাবদ্ধ নগরের সোবহানীঘাট এলাকার এক ভূক্তভোগী বলেন, 'পানির মাঝে ভাসতাছি। না আছে খাওয়ার পানি, না আছে নাওয়ার (গোসলের) পানি, না আছে ব্যবহারের পানি। আমরা কিভাবে চলমু। সারা শরীরে চুলকাচ্ছে।'
বিশুদ্ধ পানি কিভাবে জোগাড় করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'সিটি করর্পোরেশন মাঝে মধ্যে ছাড়ে একটু পানি। তখন কোমর পানি ভেঙে গিয়ে খাওয়ার জন্য এক ফোঁটা পানি নিয়ে আসি। চার দিন ধরে এমন চলছে।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, 'সিসিকের পানির লাইন অনেক এলাকায় ডুবে থাকায় পানি সরবরাহ বাধা গ্রস্ত হচ্ছে। তবে আজকে (রোববার) থেকে আমরা জলাবদ্ধ এলাকা গুলোর মানুষের মাঝে শুকনা খাবারের পাশাপাশি দুই লিটার করে পানি সরবরাহ শুরু করেছি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে কমতে পারে। এতে ধীর গতিতে হলেও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকালে সিলেট জেলার দুটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। সকাল ৯টায় কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৯৪ সেন্টিমিটার ও বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ সময় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমার সাত সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
এদিকে আজ সকাল থেকে জেলার নদ-নদীর পানি আরো খানিকটা কমেছে। জেলার গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি এখনো থাকলেও তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণ সুরমা ও বিয়ানীবাজারে নদীর পানি নেমে গেছে।