মাদারীপুরে সদর ও রাজৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় এই ভোটগ্রহণ। এই ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এরই মধ্যে ভোর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান আসিব খান এবং শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সদর উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ২২ হাজার ৪২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার, নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২১ জন। আর ৫ জন রয়েছে অন্যান্য ভোটার। এখানে মোট ভোটকেন্দ্র ১১৭টি, যেখানে ৭৯৪টি কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ভোটাররা। এদিকে রাজৈর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মোট প্রার্থী ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজৈর উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ দুই হাজার ৩৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫ হাজার ৪৪৫ জন, নারী ভোটারের সংখ্যা ৯৬ হাজার ৯০৯ জন ও অন্যান্য ভোটার দুজন।
এই উপজেলায় ৬৯টি ভোটকেন্দ্রে ৫০০টি কক্ষে ভোট প্রদানের সুযোগ পাচ্ছেন ভোটাররা। প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রতিটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ, ২০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ২৯টি ও রাজৈরে ১৪টি মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সদরে ৭টি স্টাইকিং ফোর্স ও রাজৈরে রয়েছে তিনটি। সদর উপজেলায় ৬ প্লাটুন বিজিবি ও রাজৈরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে জেলায় গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও দায়িত্ব পালন করছেন।
সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয় প্রশাসন। মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দুটি উপজেলাকে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাক হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব, আনসারসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। কোথায় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে, মোকাবিলায় প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ভোটার ভোট দিয়ে নিবিঘ্নে বাড়িতে পৌঁছতে পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।