আম খায়না এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। কাঁচা কিংবা পাকা আম সকলের পছন্দীয় ফল। আমেরও বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। ঠক এবং মিষ্টি। নামেও বহুধরনের। যেমন- ফজলী, আম্রপালি, মালদারি দেশীয় ও স্থানীয়ভাবে অনেক ধরনের নামের আম রয়েছে। শিশু থেকে আবাল বৃদ্ধরাও আম খেতে পছন্দ করে।
আম তো পরের কথা, তার আগে আগে আমের মুকুল। শীতকাল প্রায় শেষের দিকে। এরই মধ্যে বসন্ত। গাছের ডালে হিমেল হাওয়ায় দুলছে হলুদ বর্ণের আমের মুকুল। এমনই দৃশ্যের দেখা মিলেছে টেকনাফ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঘুরে দেখা যায়, টেকনাফ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে হলুদ বর্ণে ছেয়ে গেছে ঘরের আঙ্গিনা। বাড়ির ছালের উপর আম গাছের ডালে দুলছে মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। পাখিরা ডালে ডালে কিচির মিচির করছে। আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ চারদিক। হলুদ আর সবুজের মহামিলন ঘটেছে গাছে গাছে। এক কথায় আমের মুকুলের দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করছে।
প্রকৃতির পালাবদলে বাড়ির আঙ্গিনা, পুকুরপাড় ও রাস্তার ধারের আম গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে কেবলই আমের মুকুল। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর চারদিকে গাছে ব্যাপক মুকুল চোখে পড়ার মতো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রচুর ফলনের আশাবাদী টেকনাফবাসী।
তবে ভরপুর মুকুল দেখা দিলেও শংকায় রয়েছে গাছের মালিকরা। অতিরিক্ত গরমে মুকুল ঝরে পড়ছে। বৃষ্টির দেখা মিলছে না। ফলে অতিরিক্ত মুকুলের দেখা মিললেও সেই পরিমানের ফল পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় অনেকে গাছের মুকুলে পানি স্প্রে করছেন। এছাড়াও সামনে কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কাও কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অনূকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
টেকনাফ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারি কর্মকর্তা শফিউল আলম কুতুবি জানান,এবছর টেকনাফ উপজেলায় ২২৬ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে। গাছে প্রচুর মুকুল দেখা দিয়েছে। ঝরে পড়া থেকে রক্ষা পেতে গাছের গোড়ায় পানি ঢালার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া আমের মুকুল বের হলে ফুল ফোটার আগে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। আম মটরদানার মতো হলে বোরন স্প্রে করতে হবে। আমের হপার দমনের জন্য কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। গাছে নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী এই কর্মকর্তাা।