“কৃষক বাঁচাতে খাল কাটা হোক, আর খাল কাটতে যারা বাঁধা দেয় তাদের বিচার চাই এই শ্লোগানে বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চলাভাঙ্গা গ্রামের কৃষকরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।
আজ বুধবার (১৪ ফেব্রæয়ারী) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চলাভাঙ্গা মৌজার কয়েকশত কৃষক-কৃষাণী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।
ইউপি সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আঃ জলিল মিয়া, মজিদ হাওলাদার, শাহাজাহান, নয়া চৌকিদার, ফারুক, মোকলেচ চৌকিদার, রব মিয়া, ছালাম হাওলাদার, দুলাল গাজী, ওহাব মোল্লা, মজিবুর মোল্লা, নিজাম হাওলাদার, ছোবাহান মোল্লা প্রমুখ।
জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মৌজার মধ্যে দিয়ে দৌলতের শাখা খাল নামে একটি খাল ছিল। ওই খালে ১৯৮৬-১৯৮৭ সালে আমতলী উপজেলা ভূমি অফিস ৬১৮/আম ৮৬/৮৭ বন্দোবস্ত কেসের অনুকুলে মোঃ সামশের আলী নামক এক ব্যক্তিকে দেড় একর জমি বন্দোবস্ত দেয়। বন্দোবস্ত নেয়ার পর গ্রহীতারা তাদের বন্দোবস্তকৃত জমির সাথে খালের মধ্যে প্রায় ১ একর জমি গায়ের জোরে ভোগ দখল করছেন।
চলাভাঙ্গা মৌজায় প্রায় ২০০ একর আবাদী জমি রয়েছে। ওই দৌলতের শাখা খাল ছাড়া পানি নিঃস্কাসনের জন্য আর কোন খাল না থাকায় কৃষকদের জমি চাষাবাদে ওই খালের পানিই ব্যবহার করতে হয়। সম্প্রতি খালটি ভরাট হয়ে শুকিয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার ফসলী জমিতে পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়া ওই গ্রামের ভূক্তভোগী কৃষকরা খালটি খনন করার জন্য সদর ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে দাবী জানায়।
কৃষকদের ওই দাবীর পরিপেক্ষিতে আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে গতকাল মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি ) খালটির খনন কাজ শুরু করেন। কিন্তু বন্দোবস্ত গৃহিতা সামশের আলীর ছেলে ফরুকুল বারী খাল খনন করতে বাঁধা প্রদান করেন।
স্থানীয় জলিল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বন্দোবস্ত গ্রহিতা সামশের আলীর নামে অনেক রেকর্ডিও জমি-জমা রয়েছে। তিনি ভূমিহীন নয়, তারপরেও কিভাবে তিনি ভূমিহীন হিসাবে খাসজমি বন্দোবস্ত পেয়েছে তা তদন্ত করে তার নামে দেয়া বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানান।
স্থানীয়দের দাবি খালটি খনন করে কৃষকদের ভোগান্তির লাঘব ও বোরো মৌসুমে মাঠে পানি দেওয়ার উপযোগী করে দেয়ার দাবী জানান।
ওই বিষয়ে জানার জন্য বন্দোবস্ত গ্রহিতার ছেলে ফারুকুল বারীর সাথে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষকদের জন্য খালটি খনন করা খুবই প্রয়োজন। খনন না হলে এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দেবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, ওই গ্রামের ৫ শতাধিক কৃষক বোরো মৌসুমে ফসলের মাঠে পানি দিতে পারছে না। কৃষকদের দাবীর পরিপেক্ষিতে আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে খালটির খনন কাজ শুরু করলেও খাসজমি বন্দোবস্ত গ্রহিতার পরিবার খননে বাঁধা দিচ্ছে। তিনি খালটি খননের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
ওই বিষয়ে আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আবু জাহের বলেন, ওই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।