টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও টিনসেট ঘর ভেঙ্গে মালামাল বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন সেলিমের বিরুদ্ধে।
সরকারী নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও প্রকাশ্য নিলাম ডাক ছাড়াই ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও টিনসেট ঘরের মালামাল অন্যাত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও অভিভাবকরা জানান, গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন সেলিম খেয়ালখুশি মতো বিদ্যালয়ের পরিচালনার পাশাপাশি পুরাতন একটি ভবন ভেঙ্গে তার ভেতরে থাকা ইট এবং টিনসেট ঘরের কাঠ ও টিনসহ অন্যান্য মালামাল অন্যাত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয় ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকও এমন অভিযোগ তুলেছেন। প্রধান শিক্ষকের চাপের কারণে তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না।
সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে স্থাণীয় ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ১টি পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন ও ১টি লম্বা টিনসেট ঘর ভেঙ্গে ইট, টিন, কাঠসহ লক্ষাধিক টাকায় পুরাতন মামলামাল প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন গোপনে অন্যাত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী কোন বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভাঙ্গতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রকৌশলীর মাধ্যমে পুরাতন ভবনের মালামালের মূল্য নির্ধারণসহ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে টেন্ডার কমিটি টেন্ডার ও প্রকাশ্যে নিলাম ডাকের মাধ্যমে তা বিক্রি করতে পারবে। এখানে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকারি নিময়নীতি অনুসরণ না করে তার ইচ্ছা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ১টি পুরাতন ভবন ও ১টি টিনসেড ঘর ভেঙ্গে ফেলে তার মালামাল গোপনে তিনি অন্যাত্র বিক্রয় করেছেন। যা প্রকাশ্য অনিয়মের পর্যায়ে পড়ে।
ওই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, একটি কুচক্রি মহল বিদ্যালয়ের উন্নয়ন দেখে ঈর্শ্বাণিত হয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। স্কুলের পুরাতন ভবন বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে ও শিক্ষকদের বসার রুমে বাথরুম নির্মাণ করা হয়েছে। টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভাঙ্গা ও মালামাল অন্যাত্র বিক্রি করা যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডঃ এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক পুরাতন ভবন ভাঙ্গা ও মালামাল অন্যাত্র বিক্রি করার বিষয়টি তার জানা নেই।
বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, সরকারি নিময় অনুযায়ী ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভাঙ্গতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে টেন্ডার অথবা প্রকাশ্যে নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। তবে ওই নিয়ম অনুসরণ না করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলে তার মালামাল অন্যাত্র বিক্রয় করার বিষয়টি প্রকাশ্য অনিয়মের পর্যায়ে পড়ে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রমানিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।.
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।