বছরের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহ প্রায় শেষ। কোনো তোড়জোড় নেই লাখো মানুষের সমাগমের ঢাকা ২৮তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আঙিনায়। এখনো ফাঁকা মাঠ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে পেছানো হয়েছে মেলার তারিখ। তাই বরাদ্দ পেয়েও ঢিলেঢালাভাবে চলছে স্টল নির্মাণকাজ। কিন্তু কবে বসবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৮তম আসর, তার সঠিক দিনক্ষণ জানেন না কেউ।
জানা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে যথারীতি বছরের ১ম দিন থেকেই বসে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। কিন্তু এবার ভিন্নরূপ। ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে পেছানো হয়েছে মেলার ২৮তম আসর। নির্বাচনপরবর্তী নতুন সরকার ও নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠন হওয়ায় এখনো মেলার দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। ফলে এবারের মেলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন মেলায় বরাদ্দ নেওয়া স্টল মালিক-শ্রমিকরা। নির্দিষ্ট সময় মেলা শুরু না হওয়ায় বিশাল রপ্তানির ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ।
১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকার সেরে বাংলা নগরে বসত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। কিন্তু যানজটসহ নানা জটিলতার কারণে ২০২১ সালে রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল উপশহরের ৪নং সেক্টরে স্থায়ী প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয় “বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিভিশন স্টেন্টার”। প্রকল্পটি নির্মাণ করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারো (ইপিবি)।
সেই থেকে এখানেই বসছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। অনেকটা যানজটমুক্ত, সুবিশাল জায়গা জুড়ে, কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত, মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বসছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।
৩য়বারের মতো স্থায়ী প্যাভিলীয়নে “বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিভিশন স্টেন্টার” এ মেলা বসাতে কাজ করছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারো (ইপিবি)। সে লক্ষ্যেই চলছে স্টল নির্মাণকাজ ও নেওয়া হচ্ছে মেলা বসার সব প্রস্তুতি। এ বছর মেলায় প্রবেশের টিকিট মূল্য কিছুটা বেড়ে বড়দের জন্য ৫০ টাকা আর ছোটদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
টিকিট বরাদ্দ বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ জানুয়ারি মেলার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করায় উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেও সুনির্দিষ্টভাবে দিনক্ষণ নির্ধারণ না হওয়ায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন দোকান মালিক-শ্রমিকরা। এবারের মেলায় ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিশ্বের ১২ দেশ অংশগ্রহণ করবে এবং ছোট বড় মিলিয়ে ৩৩৫টি স্টল থাকছে। দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বাহারি পণ্যসামগ্রী থাকার কথা বলছেন দোকানিরা।
এ ছাড়া শিশুদের জন্য শিশুপার্ক আর মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়াও দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য অন্যান্য বছরের মতোই এবারো বড়সড় কোম্পানিগুলোর চমকপ্রদ অফার থাকছে বলে জানান দোকানিরা।
এ বিষয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান জানান, মেলায় বিআরটিসি বাস দর্শনার্থীদের আনা-নেওয়ায় কাজ করবে। ইতোমধ্যে মেলা বসার সব প্রস্তুতিই নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেলার সারসংক্ষেপের চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলেই মেলা শুরু করা হবে।