নানা বাধা বিপত্তি থাকা সত্তেও প্রতিদিন অহরহ রোহিঙ্গাদের মত ক্যাম্পের বেস্টনি ডিঙ্গিয়ে চট্রগ্রামের লোহাড়গাড়ায় বাঙালী পরিচয়ে এক বাড়িতে কাজ নেন রোহিঙ্গা যুবক নূর মোহাম্মদ (২১)।মানবিক কারণে রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ নুর কে মুরগীর ফার্মে চাকরি দেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার মোহাম্মদ ফরিদ। কিন্তু, সেই নুরেই ফরিদের ছেলে মিনহাজকে ট্রেন দেখানোর কথা বলে অপহরণ করে কক্সবাজার নিয়ে যায়।পরে মুক্তিপণ হিসেবে মুঠোফোনে সন্তানের জীবনের বিনিময়ে দাবি করা হয় মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা।
রোববার গভীর রাতে কক্সবাজারের একটি রিসোর্ট থেকে অপহৃত শিশু ও অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরবর্তীতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
অপহৃত আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ (৭) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বাগান পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ফরিদুল আলমের ছেলে। গ্রেফতার মোহাম্মদ নুর উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-৯ এর বাসিন্দা শাহ আলমের ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানায়- গত ৮ ডিসেম্বর চুনতি এলাকার মুরগির ফার্ম থেকে সম্প্রতি চালু হওয়া 'কক্সবাজার এক্সপ্রেস' ট্রেন দেখার কথা বলে শিশু মিনহাজকে নিয়ে যায় নুর। তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরানোর পর মুঠোফোনে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। দুই ধাপে ২০ হাজার করে পরিবারটি ৪০ হাজার টাকা পাঠায়। তারপরও শিশুটিকে ছেড়ে দেয়নি অপহরনকারী। তারপর থেকে খোঁজ না পেয়ে থানায় অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবার। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামে কক্সবাজা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিম।
ডিবি আরও জানায়- বিভিন্ন মাধ্যমে তদন্তের পর কক্সবাজার পৌর শহরের হোটেল-মোটেল জোনের প্রিন্স রিসোর্ট নামে একটি হোটেলের একটি কক্ষ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে অপহরণকারী মোহাম্মদ নুরকেও গ্রেফতার করা হয়।
প্রায় ৪০ ঘন্টার অভিযানের কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন- রোহিঙ্গারা বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে চাকরি ও বসবাস শুরু করেছে। যার কারণে দ্রুত অপরাধ করে পালানোর সুযোগ থাকে। প্রায় ৪০ ঘন্টার অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যথায় প্রাণ ঝুকিতে ছিল। পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করছে।
পুলিম সুপার আরও বলেন- গ্রেফতার নুরের ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় অন্যকোন চক্র রয়েছে কিনা সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।