ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

বরগুনায় প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে হচ্ছে স্বজনপ্রীতি

বরগুনা প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৩

বরগুনায় প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে হচ্ছে স্বজনপ্রীতি
বরগুনা সদর ১০ নং নলটোনা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পনু মেম্বারের নামে অভিযোগ উঠেছে প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে সেই চাল দেন তার আত্নীয়দের। 

ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের মানবিক কর্মসূচির আওতায় জেলেদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে পনু মেম্বার তার আত্মীয়-স্বজনদেরকে চাল দিচ্ছেন। যারা জেলে নয় কখনো মাছ স্বীকারে যায়নি এমন লোকদেরকেও চাল দিয়েছে অথচ যারা গভীর সাগরে গিয়ে মাছ স্বীকার করেন তাদেরকে চাল দেয়া হচ্ছে না। 

রাজীব নামের এক জেলে বলেন, আমি ৫ বছর ধরে সাগরে জাল বাই কিন্তু আমি কোন চাউল পাইনা কিন্তু এলাকার দোকানদাররা চাউল পায়।

শহিদুল ইসলাম এর স্ত্রী মোসা. ফিরোজা বেগম বলেন, আমার স্বামী গত ২৫ বছর যাবৎ সাগরে জাল বায়, আমার স্বামী মৎস অফিস থেকে ট্রেনিংও পেয়েছে। আমরা আগে চাল পাইতাম কিন্তু এই পনু মেম্বার হওয়ার পর আমাগো নামডা কাইট্টা দেছে। সেদিন চাল দেয়ার সময় আমার ছেলে চাল আনতে গেছে তখন মেম্বরে আমার ছেলের গেডি ধইরা নামাইয়া দেছে বলে তোরা আর চাউল পাবি না।

মো. এনায়েত মিয়া নামের এক জেলে বলেন, আমি অনেক বছর ধরে সাগরে জাল বাই, পনুর নির্বাচনে হের পক্ষপাতিত্ব করিনায় হেইলইগা মোর নামডা কাইট্টা দেছে। 

মোসা. নাজমা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আমার ছেলে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে এক্সিডেন করে, তার চিকিৎসার জন্য দেড় লক্ষ টাকা লাগছে। কিন্তু আমার স্বামী বা ছেলে কারে নামেই চাল দেয়নি পনু মেম্বর। 

প্রতিবেশী লতিফ আকন বলেন, আমার পিছনের বাড়িটি আমার ভাতিজার ওরা অনেক বছর ধরে বাড়িতে থাকেনা, কখনো কেউ জাল বাওয়া পেশায় ছিলো না। কিন্তু মেম্বরের সাথে ভাল পরিচয় বিধায় মেম্বর তাকে ভিজিএফ চাল দেয়।

মো. শহীদ বিশ্বাস বলেন, আমার বাবা দীর্ঘ বছর জেলে ছিলো, আমিও সাগরে মাছ ধরি, আমরা ২ বছর আগেও চাল পেতাম কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ করি বিধায় পনু মেম্বার আমাদের নাম কেটে দিছে।

মো. মাহফুজ মাঝি বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে গভীর সাগরে মাছ স্বীকার করি, কিন্তু আমি সহ আমার ট্রলারে যারা মাছ ধরতে যায় কারোই জেলে তালিকায় নাম নাই। এ বিষয়ে আমার ট্রলার মালিক চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে চেয়ারম্যান বলেন কারো জন্য সুপারিশ করতে গেলে ৫ বছরেও সে কোন সরকারি বরাদ্দ পাবে না।

এলাকাবাসী ও জেলেরা দাবি জানিয়েছেন যাতে মৎস কর্মকর্তারা তদন্ত করে প্রকৃত জেলেদের চাল দেয়া হয় সে বিষয়ে ব্যাবস্থা নিতে। এবং পনু মেম্বারের দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসন যাতে সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

অভিযোগের বিষয়ে পনু মেম্বারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সংযোগ পাওয়া যায়নি।

বরগুনা সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, জেলে ব্যাতীত অন্য কোন পরিবার এ চাল পাবে না, যদি এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায় তবে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা বলেন, এধরণের কোন অভিযোগ পাইনি তবে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।