ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

ফুলবাড়ীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কবিগানের আসর, শ্রোতাদের উপচেপড়া ভিড়

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: সোমবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৩

ফুলবাড়ীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কবিগানের আসর, শ্রোতাদের উপচেপড়া ভিড়
মন্দির চত্বরে টাঙ্গানো হয়েছে সামিয়ানা, তার মাঝখানে বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন বাদকেরা। আর দুই পাশে গান করছেন গায়কের দল। চারপাশে ভিড় করছেন শত শত নারী-পুরুষ। কেউ মাটিতে খড় বিছিয়ে বসে, কেউবা দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন গান,মুগদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছেন গায়কের দিকে। এই হলো দেশীয় সংস্কৃতি লোক সংগীতের অংশ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কবিগানের আসর। 

রোববার (২২অক্টোবর) রাতে এমনি এক জমজমাট গানের আসরের দেখা মিলে  দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী জমিদারপাড়া গ্রামে। শারদীয় দূর্গা পুঁজা উপলক্ষে জমিদার পাড়া সর্বজনীন দূর্গা মন্দির কমিটির আয়োজনে মন্দির চত্বরপ অনুষ্ঠিত হয় এই কবিগানের আসর।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে দলে দলে লোকজনের সমাগম বাড়তেই থাকে মন্দির চত্বরে, রাত যত গভীর হয় জমে উঠে গানের আসর। রাত জেগে মুগদ্ধ হয়ে গান  উপভোগ করেন শতশত  দর্শক শ্রোতারা,চারিদিক উপচেপড়া ভিড় ।

 বিরল উপজেলার দিতি রানী সরকার ও তাঁর দল এবং পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া গ্রামের এম.এ.এম বরাত সরকার ও তাঁর দল কবিগানের আসরে অংশ নেয়।তাৎক্ষণিক সুরের সঙ্গে কথা বেঁধে মঞ্চে এ গান পরিবেশন করা হয়। পাল্টাপাল্টি যুক্তি-তর্ক আর গানে গানে দুই কবিয়ালের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে চলে এ আসর।

দিনাজপুর সদর থেকে আসা হৃদয় কুমার রায় (৫২) বলেন, দূর্গাপূজা দেখতে আত্মীয়র বাড়ীতে এসেছিলাম। আজ চলে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু  রাতে কবি গান অনুষ্ঠিত হবে, তাই আর বাড়ী যাইনি।  কবিগান উপভোগ করছি ভালো লাগছে।

খয়েরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, ‘একসময় গ্রামবাংলার বিনোদনের অন্যতম খোরাক ছিল কবিগান।  যুগের বিবর্তে এসব হারি,যেতে বসেছে। এটি বাংলা লোকসংগীতের একটি বিশেষ ধারা। বাংলার এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আমার এলাকায় এই গান অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমি আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

কবি গানের আয়োজক জমিদার পাড়া সর্বজনীন দূর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি রাখাল চৌধুরী বলেন, আমাদের এই দূর্গা মন্দিরে প্রতি বছর দূর্গা পূঁজোতে পূঁজার আনন্দের সাথে আরও আনন্দ যোগ করতে আমরা প্রতি বছর যাত্রা,পালা গানের আয়োজন করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় এবছর কবিগানের আয়োজন করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের প্রচারে ‘এত লোকের সমাগম হবে বুঝতে পারিনি। সত্যি ভীষণ অবাক হয়েছি। শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে কবিগান উপভোগ করেছেন। আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞ, আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য।