ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

শুকায়নি বাসরের ফুল, মুছে যায়নি হাতের মেহেদী হারিয়ে গেল জহুরুল

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: বুধবার, অক্টোবর ৪, ২০২৩

শুকায়নি বাসরের ফুল, মুছে যায়নি হাতের মেহেদী হারিয়ে গেল জহুরুল
সাজানো বাসরের ফুল এখনও শুকাইনি; হাতের মেহেদীও মুছে যায়নি, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ২১ ঘন্টা পেরিয়েছে। কথা ছিল বাড়ী ফিরে পরেরদিন বুধবার শ্বশুর বাড়ী যাবেন দুজনে। নিয়তির কি পরিহাস! তার আগেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেল সদ্য বিবাহিত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর জহুরুল ইসলাম (৩৮)।

নিহত জহুরুল ইসলাম ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর লক্ষিপুর গ্রামের গোফ্ফার আলী একমাত্র ছেলে। তিনি নিলফামরী জেলার জলঢাকা থানায় ডিএসবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত ছিলেন।
মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের কলেজ বাজার এলাকায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী তার বন্ধু একই ইউনিয়নের লালপুর গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে মোনায়েম হোসেন সুজন (৩৫)।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে পুলিশের চাকুরিতে যোগদান করেন জহুরুল ইসলাম। সাত দিনের ছুটিতে এসে সোমবার (২ অক্টোবর) রাত ৯টায় উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের উষাহার বানাহার গ্রামের আইয়ুব আলীর মেয়ে মোছা. রুমা আক্তারের সাথে জহুরুল ইসলাম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরদিন মঙ্গলবার সকালে বন্ধু সুজনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে রাজশাহীর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার সাক্ষ্য দিতে যান তিনি। সাক্ষ্য শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। ফেরার পথে বাড়ী থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জহুরুলের এই অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ। শোকাহত হয়ে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা। এদিকে বিয়ের ২১ ঘণ্টার মাথায় স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ নির্বাক নববধূ রুমা আক্তার।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিরামপুর থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস নওগাঁ যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিরামপুরের কলেজ বাজার এলাকায় বিরামপুর পেট্রোল পাম্পের সামনে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোটরসাইকেলের দুইজন আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

দুর্ঘটনায় আটক বাসের এক যাত্রী আব্বাস আলী বলেন, ‘আমরা সন্ধ্যার দিকে উমর পরিবহন নামের একটি বাসে নীলফামারী থেকে বরযাত্রী নিয়ে রাজশাহী যাচ্ছিলাম। কদিন আগে আমার ভাতিজার রাজশাহীতে বিয়ে হয়। বিয়ে করা ছেলে-মেয়ে রাজশাহীতে অবস্থান করায় সেখানে আনতে যাচ্ছিলাম। পথেই এ দুর্ঘটনা।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কলেজ বাজার এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়। তাদের মধ্যে একজন পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত এসআই (ডিএসবি) এবং অন্যজন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় দুজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।