কুড়িগ্রামের নদী বিধৌত চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা চালু করে কৃষকের ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছে আরডিএ (পল্লী উন্নয়ন একাডেমি)। সরকারি অর্থায়ণে কৃষকরের দ্বারপ্রান্তে পাওয়া ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পের সেচে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে চাষিদের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
বন্যা খরা প্রকৃতির সাথে যুদ্ধে করে চলা এখানকার কৃষকরা ছিল শ্যালো মেশিনের সেচ পাম্পের উপর নির্ভর। শ্যালো মেশিনে জ্বালানি ডিজেলের দাম বৃদ্ধি ও যান্ত্রিক ভোগান্তি না থাকায় কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি চরাঞ্চলের কৃষকরা।
জানা গেছে, চিলমারীর সদর ইউনিয়নের বজরাদিয়ার খাতা গ্রামে কৃষকের ক্ষেতে পানি দিতে ছুটে বেড়াচ্ছে ভ্রাম্যমাণ সোলার সেচ পাম্প।ওই এলাকার প্রায় ১৫ শ কৃষকের ধান ও ফসলের ক্ষেতের সেচের জন্য নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান সোলার পাম্পটি। লোহার এঙ্গেলের উপর বিশেষ কায়দায় স্থাপন করা হয়েছে ৮টি সোলার প্যানেল। ব্যাটারিবিহীন একটি কনভার্টার সাহায্যে বৈদ্যুতিক মটর সেট করে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে নদী নালা খাল বিল থেকে সহজে পানি পাচ্ছেন কৃষকেরা। পরিবহনের ঝামেলা এড়াতে চাকা লাগিয়ে বানানো এই ভ্রাম্যমাণ সোলার প্যানেলের সেচ পাম্প যাচ্ছে কৃষকের ক্ষেতের কাছে।খুব সহজে হাতের কাছে এমন সেচ ব্যবস্থা পেয়ে আশার আলো বুনছেন কৃষকরা।
কথা হয় বজরাদিয়ার খাতা গ্রামের মো. হারুন রশীদ নামের এক কৃষকের সাথে তিনি বলেন,সোলার সেচ পাম্প কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে আমরা অনেক খুশি। কেননা শ্যালো ইঞ্জিন সেচ পাম্পে এক বিঘা ধানের জমিতে প্রায় ৮-৯ হাজার টাকা খরচ হতো সেখানে ৪৫০০ টাকায় আমরা ফসলে পানির কাজ শেষ করতে পারছি।আবাদে পানি নিয়ে আর আমাদের কোন চিন্তা নাই।
আরেক কৃষক মোঃ আবু বক্কর বলেন,ক্ষেতে পানি নিয়ে আমাদের এলাকার মানুষের আর দৌড়াদৌড়ি নাই।ঘুম থেকে উঠে কে আগে জমিতে পানি নিবে সে দিন শেষ।আমরা ক্ষেত উঠা পর্যন্ত সোলার পাম্পে সাথে চুক্তি করি।ওরা এসে আমাদের ধান ক্ষেত ফসলের ক্ষেতে পানির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এমন নিরাপদ নির্ভেজাল সেচ ব্যবস্থা পেয়ে আমরা খুবই খুশি।এই ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পারছি।চরের পতিত জমিতে এখন ইরি বোরো আবাদ করতে পাচ্ছি।
সোলার প্যানেল সেচ পাম্প রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মোঃ মাহফুজার রহমান বলেন,এই ভ্রাম্যমাণ সেচ পাম্প সহজে স্থানান্তর করা যায়। জ্বালানী তেল ও যান্ত্রিক ঝামেলার কোন বালাই নেই। যেকোন জায়গায় সহজে স্থানান্তর করা যায়। কম খরচে পানি পেয়ে খুশি কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষান দাশ বলেন,এটা সরকারি অর্থায়নে আরডিএ এর একটি প্রকল্প।স্থানীয় একজন কৃষকের তত্বাবধানে ওই ভ্রাম্যমান সোলার পাম্পে প্রায় ১৫০০ কৃষক সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। চরাঞ্চলের কৃষকদের ভ্রাম্যমান সোলার সেচ পাম্পে আগ্রহ বেড়েছে।