সিলেট বাসা বাড়িতে প্রিপেইড গ্যাস মিটার সংযোগে বাড়িওলার কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন ভাড়াটিয়ারা। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সিলেট নগরীর ৫০ হাজার গ্যাস গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ জোরদার করেছে জালালাবাদ গ্যাস।
গত এপ্রিল থেকে শুরু হয় মিটার বসানোর কাজ। ৪ মাসে সিলেটে প্রিপেইড মিটারের আওতায় এসেছেন ১৭ হাজারের বেশী গ্যাস গ্রাহক। আগামী ৪ মাসের মধ্যে বাকী ৩৫ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। তবে এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই কাজের গতি বাড়িয়েছে কাজ জোরদার করেছে জালালাবাদ গ্যাস। এ ব্যাপারে গ্রাহকের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
এদিকে সিলেট সিটির প্রায় ওয়ার্ডের বাসা বাড়িতে মিটার বসানোর পর থেকে বাড়িওয়ালারা সুযোগ বুঝে ভাড়াটিয়ার উপর গ্যাস বিল চাপিয়ে দিয়েছেন। অথচ বাসা ভাড়া চুক্তিতে মালিক পক্ষের সাথে গ্যাস বিল ভাড়ার সাথে নিয়ে নিয়েছেন।
কিন্তু মিটার লাগানোর পর থেকে বাসার মালিকরা চোখ বদলে দিয়েছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। অনেক সময় এর প্রতিবাদ করলে ভাড়াটিয়াদের বাসা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সিটি কর্পোরশনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন কোন মালিক পক্ষ থেকে এভাবে জুলুম করে ভাড়াটিয়াদের তারা অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিয়ম অনুযায়ী যাদের বাসায় দু চুলার বিল এক হাজার পঞ্চাশ টাকা বিল আসে তার উপরে যদি বিল আসে সেটি ভাড়াটিয়ারা বহন করতে হবে।
জানা গেছে, গ্যাসের অপচয় রোধ, সাশ্রয় ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সিলেটে প্রিপেইড মিটার স্থাপন জোরেশোরে চলছে। প্রথম ধাপে এই প্রকল্পের আওতায় আসছেন নগরী ও সদর উপজেলার ৫০ হাজার গ্রাহক। এরই মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার বাসাবাড়িতে মিটার বসানোর কাজ শেষ করেছে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। এতে মাসে প্রায় ৪০০ টাকা কম খরচ হচ্ছে বলে গ্রাহকরা জানিয়েছেন।
জালালাবাদ গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, বতর্মানে তাদের ২ লাখ ২১ হাজার ৪৫৯ গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে আবাসিক বা গৃহস্থালি ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৬৪ জন। বাকি ১ হাজার ৬৮৪টি সংযোগ বিভিন্ন শিল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হোটেল- রেস্তোরাঁ, চা বাগান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের। আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে সিলেট সিটি করর্পোরেশন ও সদর উপজেলার প্রায় ৯৫ হাজার। তাদের মধ্যে ১ম ধাপে ৫০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। গত বছওেংষধস সেপ্টেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে জালালাবাদ গ্যাস। প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। চুক্তির পর মিটার স্থাপনে মালপত্র সিলেট আনা হয়।
গত মাসের শেষের দিকে প্রচার চালানোর পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে জালালাবাদ গ্যাস। কিন্তু এর আগ থেকে অর্থাৎ এপ্রিঔেধষরষ শেষের দিকেই সিলেট সিটি করর্পোরেশন এলাকা ও সদর উপজেলায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। মিটার গুলো বিনামূল্যে দিলেও একাধিক ডাবল চুলা থাকা সাপেক্ষে বাসা পর্যন্ত ডিআই পাইপ ও সংযোগ স্থাপনের খরচ গ্রাহককে বহন করতে হচ্ছে। তবে গ্যাস রাইজার থেকে সরাসরি একটি লাইন পর্যন্ত খরচ বহন করছে জালালাবাদ গ্যাস।
এ ব্যাপারে জালালাবাদ গ্যাস টিঅ্যান্ডডি সিস্টেমস লিমিটেডের (জেজিটিডিএসএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর আহমদ চৌধুরী বলেন, প্রিপেইড মিটারের কাজ এপ্রিলের শেষ দিকে শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার গ্রাহক মিটারের আওতায় চলে এসেছেন। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই ১ম ধাপের ৫০ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শেষ করার ব্যাপারে আশাবাদী।
তবে এজন্য গ্রাহকদের আগ্রহ ও আন্তরিকতা থাকতে হবে। ১ম ধাপে ৫০ হাজার মিটার স্থাপন শেষ হলে পরবর্তীতে আরেক ধাপে আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাকীদেরও প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হবে।